
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে গ্রেপ্তারের জন্য ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে। বিদেশে পলাতক পুতুলের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। গত ৪ মে এই আবেদনটি করা হয়।
এর আগে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়। বিদেশে পলাতক ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে পৃথক তিনটি ধাপে আবেদন করে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা। ওই আবেদনের ভিত্তিতে গত ১০ এপ্রিল পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিবির এক কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পলাতক আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতির মামলার পটভূমি
জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। ওইদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ প্রদান করেন।
দুদক ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে আদালত এই আবেদন মঞ্জুর করেন।
ইন্টারপোলের পদক্ষেপ
ইন্টারপোল সাধারণত রেড নোটিশ জারি করার আগে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সুপারিশ ও আদালতের নির্দেশনা বিবেচনা করে। এটি একটি আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হিসেবে কাজ করে, যা বিশ্বের ১৯৪টি সদস্য রাষ্ট্রে কার্যকর। রেড নোটিশ জারি হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো পলাতক আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য থাকে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির একটি প্রতিফলন। পুতুলের বিরুদ্ধে এই রেড নোটিশ কার্যকর হলে তাকে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা সহজ হবে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই ধরনের অভিযানে সফলতা আসতে পারে। ইন্টারপোলের সহায়তায় পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় বিচার করা সম্ভব হবে।