Friday, May 9
Shadow

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উচ্চপর্যায়ের আর্থ-বাণিজ্য বৈঠক প্রসঙ্গে চীনা মুখপাত্রের জবাব

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আজ (বুধবার) জানিয়েছেন যে, মার্কিন নতুন সরকার শপথগ্রহণের পর ধারাবাহিক বিশৃঙ্খল ও যুক্তিহীন একতরফা শুল্ক আরোপ ব্যবস্থা নিয়েছে, যা গুরুতরভাবে চীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষতি করেছে এবং আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্য শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধিতে কঠোর চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। নিজের বৈধ অধিকার রক্ষায় চীন দৃঢ়ভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।

সম্প্রতি মার্কিন কর্তৃপক্ষ শুল্ক ব্যবস্থার সমন্বয় নিয়ে অব্যাহতভাবে মন্তব্য করেছে এবং বিভিন্ন পদ্ধতিতে চীনের কাছে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে। মার্কিন পক্ষের তথ্য বিশ্লেষণ করে বৈশ্বিক আকাঙ্খা, চীনের স্বার্থ, মার্কিন শিল্প ও ভোক্তাদের আহ্বান বিবেচনা করে ওয়াশিংটনের সাথে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। এ পরিপ্রেক্ষিতে, চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হ্য লি ফেং প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে সুইজারল্যান্ড সফরকালে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সাথে বৈঠক করবেন।

৯ থেকে ১২ মে পর্যন্ত চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী হ্য লি ফেংয়ের সুইজারল্যান্ড সফরকালে মার্কিন পক্ষের সাথে বৈঠকের কথা ঘোষণা দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে সংবাদদাতাদের প্রশ্নের জবাবে চীনা মুখপাত্র এ মন্তব্য করেছেন।

তিনি আরো বলেন, চীনের মতাধিষ্ঠান কখনো পরিবর্তন হয়নি। বাণিজ্য যুদ্ধ বা বাণিজ্য আলোচনা যাই হোক না কেন, নিজের উন্নয়নের স্বার্থ সুরক্ষার চীনের দৃঢ়প্রতিজ্ঞার পরিবর্তন হবে না। আন্তর্জাতিক সমতা ও ন্যায্যতা, আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্য শৃঙ্খলা মেনে চলার লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন হবে না।

‘লড়াই চাইলে, আমরা আছি; আলোচনা চাইলে, আমাদের দরজা খোলা।’ যে কোনো সংলাপ বা আলোচনা পারস্পরিক সম্মান, সমান পরামর্শ ও পারস্পরিক উপকারিতার ভিত্তিতে করতে হবে। চীনা প্রবাদে বলা হয়েছে, ‘কারো কথা শোনো, আর তার কাজও দেখো।’ মার্কিন পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মোকাবিলা করতে চাইলে একতরফা শুল্ক ব্যবস্থায় ওয়াশিংটন ও বিশ্বের জন্য সৃষ্ট গুরুতর নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে, আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্য নিয়ম, সমতা ও ন্যায্যতা এবং বিভিন্ন মহলের যুক্তিসঙ্গত কন্ঠ শুনতে হবে। আন্তরিকতার সাথে ভুল আচরণ সংশোধন করে চীনের সাথে সমানভাবে পরামর্শের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ সমাধান করতে হবে। যদি কথা ও আচরণ এক না হয়, আলোচনার অপচেষ্টায় চীনের সঙ্গে জবরদস্তি ও প্রতারণা করলে তা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য অর্থনৈতিক সত্তা এখন মার্কিন পক্ষের সাথে আলোচনা করছে। চীন জোর দিয়ে জানায় যে, ‘আপসে শান্তি মেলে না, সমঝোতায় সম্মান আসে না।’ কেবল নিজের মতাধিষ্ঠান, সমতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখা নিজের স্বার্থ রক্ষার সঠিক পদ্ধতি। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হলেও চীন দৃঢ়ভাবে বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করবে এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে কেন্দ্রিক বহুপক্ষবাদ ব্যবস্থা রক্ষা করবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে উন্নয়নের সুযোগ বিনিময় করবে।

বিভিন্ন পক্ষের সাথে পারস্পরিক উপকারি সহযোগিতা গভীরতর করবে, সমন্বয় ও আদান-প্রদান জোরদারে যৌথভাবে একতরফা সংরক্ষণবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধিতা করবে, যৌথভাবে অবাধ বাণিজ্য ও বহুপক্ষবাদ রক্ষা করে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব অর্থনীতি নির্মাণ করবে চীন।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *