Tuesday, May 6
Shadow

তৃতীয় দিনেও হয়নি কুয়েটের ক্লাস, সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী বিপাকে


এম এন আলী শিপলু, খুলনা : দীর্ঘ আড়াই মাস পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার তৃতীয় দিনেও শিক্ষকরা যাননি ক্লাসে। শিক্ষকদের লাঞ্চিত করা শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে আসবে না এবং পরীক্ষাও নিবে না। তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে কুয়েটের সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকরা ক্লাসে না যাওয়ায় শিক্ষার্থীবিহীন ক্লাসরুমগুলো ফাঁকা। হলের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই নিজ-নিজ কক্ষে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কিছু-কিছু হলের সামনে আড্ডা দিচ্ছে, আবার অনেককেই রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দেখা তেমন একটা মেলেনি। নিরাপত্তার জন্য প্রধান গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী কয়েকজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। তারা এর বিচার দাবি করলেও কুয়েট প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শিক্ষকদের লাঞ্চিতকারীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না। এছাড়া ৭ দিনের মধ্যে শাস্তি কার্যকর না হলে প্রশাসনিক কাজ থেকেও বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এদিকে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের ঘটনায় এরই মধ্যে দুই দফা ক্ষমা চেয়েছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষকরা ক্লাসে না ফেরায় বিপাকে পড়েছেন ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী। কবে থেকে আবার ক্লাস শুরু হবে তা এখনও অনিশ্চিত। কুয়েটে আগে থেকেই প্রায় দেড় বছরের সেশনজট রয়েছে। এর ওপর গত আড়াই মাস কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি। এ অবস্থা চলমান থাকায় বেড়েছে সেশনজট।

কুয়েটের কয়েক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কুয়েটে এক বছরেরও বেশি সেশনজট ছিল। আরও আড়াই মাস পিছিয়ে গিয়েছি।’ তারা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ভুল-ত্রুটির জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমরা চাই দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।’

কুয়েটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই ক্যাম্পাসের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর ফলে প্রশাসনিক অনেক সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে। ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কর্মকান্ডও স্থবির হয়ে পড়েছে।’

কুয়েটের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান ভুঞা ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, ‘উপাচার্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সংকট নিরসনের চেষ্টা করছেন।’

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এর আগে কখনও এত দীর্ঘ সময় ধরে অচলাবস্থা দেখেনি কুয়েটের কেউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *