Wednesday, May 7
Shadow

লালমনিরহাটে ঘাস বিক্রি করে স্বাবলম্বী কাজল মিয়া

নিজের জমিতে ঘাস চাষ করে প্রতিদিন আয় ১৫০০ টাকা পর্যন্ত, স্বপ্ন দেখছেন সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের

গরু পালনের পাশাপাশি উন্নত জাতের ঘাস চাষ ও বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের নওদাবাস গ্রামের বাসিন্দা কাজল মিয়া (৩৬)। পরিত্যক্ত জমিকে কাজে লাগিয়ে তিনি এখন পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী এবং একজন সফল কৃষক।

কাজল মিয়া জানান, প্রতিদিন সকালেই তিনি নিজ হাতে ঘাস কেটে ভ্যানে করে নিয়ে যান সদরের বড়বাড়ী বাজারে। সেখানে কৃষক, গৃহস্থ, গরুর খামারি—বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তার ঘাস কিনে থাকেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ঘাস বিক্রি হয়। মাসে এতে করে আয় হয় প্রায় ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।

ঘাসের দাম প্রসঙ্গে কাজল বলেন, “প্রতিটি ঘাসের আঁটি আকার অনুযায়ী ১০ থেকে ২০ টাকা দামে বিক্রি হয়। আগে অল্প মজুরিতে দিনমজুরি করতাম, তখন সংসার চালানো খুবই কষ্টকর ছিল। এখন নিজের জমিতে ঘাস চাষ করে ঘরে বসেই আয় করছি।”

কাজলের পরিবারে রয়েছেন তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন (২৬), পাঁচ বছরের ছেলে মাহিন বাবু ও দুই বছরের মেয়ে কাশফিয়া জান্নাত। ঘাস চাষের পাশাপাশি তিনি কয়েকটি গরুও পালন করছেন, যা তার আয়ের আরেকটি উৎস হিসেবে কাজ করছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাজল বলেন, “আমি চাই আমার ছেলে একদিন সেনাবাহিনীর বড় অফিসার হোক, আর মেয়েটিকে ডাক্তার বানাতে চাই। ঘাস চাষের পরিধিও আরও বাড়াতে চাই। যদি সরকার সহযোগিতা করে, তাহলে বড় পরিসরে ঘাসের ব্যবসা শুরু করে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারব।”

বাজারে ঘাস কিনতে আসা গরুর খামারি জলিল হোসেন (৫৪) বলেন, “এই বাজারে অনেকেই ঘাস বিক্রি করেন, তাদের মধ্যে কাজল অন্যতম। এখানে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী দামে ঘাস পাওয়া যায়, যা আমাদের গরুর খাদ্য হিসেবে খুব উপকারী।”

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন জানান, “বর্ষা মৌসুমে গবাদি পশুর খাদ্যসংকট দেখা দিলে এই ঘাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘাস চাষে আগ্রহীদের আমরা সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।”

তরুণদের উদ্দেশ্যে কাজল মিয়া বলেন, “যারা বেকার, তারা খুব অল্প পুঁজিতে ঘাস চাষ শুরু করতে পারেন। এতে দ্রুত আয় সম্ভব এবং স্বাবলম্বী হওয়া যায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *