
চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও সফররত আজারবাইজানি প্রেসিডেন্ট ইলহাম হায়দার ওগলু আলিয়েভ, আজ (বুধবার) বেইজিংয়ে, এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে দু’নেতা চীন-আজারবাইজান কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন।
বৈঠকে সি বলেন, দুই দেশের উচিত পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা বৃদ্ধি করা, ব্যবহারিক সহযোগিতা আরও গভীর করা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা, দু’দেশের মধ্যে সার্বিক সহযোগিতার একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করা, একে অপরের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনে সহায়তা করা, এবং দুই দেশের জনগণের জন্য আরও কল্যাণ সৃষ্টি করা।
সি বলেন, চীন আজারবাইজানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভূখন্ডের অখণ্ডতা রক্ষা এবং জাতীয় অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণের অধিকারকে সমর্থন দিয়ে যাবে। চীন আজারবাইজানের সাথে আইন প্রয়োগ ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা চালাতে চায়। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দু’দেশের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়েছে। দু’দেশের উন্নয়ন-কৌশলগুলোর মধ্যে সম্পর্কে জোরদার করতে হবে, সহযোগিতার প্রক্রিয়া উন্নত করতে হবে, সহযোগিতার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে, যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ বাস্তবায়নকে উত্সাহিত করতে হবে, এবং উচ্চমানের উন্নয়ন অর্জন করতে হবে। দু’দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, পর্যটন, যুব এবং স্থানীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে উত্সাহিত করা ও সমর্থন করা উচিত।
সি আরও বলেন, শুল্কযুদ্ধ ও বাণিজ্যযুদ্ধ সকল দেশের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের ক্ষতি করে, বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে, ও বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। চীন আজারবাইজানের সাথে যৌথভাবে জাতিসংঘকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, নিজস্ব বৈধ অধিকার ও স্বার্থ দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে, এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষা করতে ইচ্ছুক।
জবাবে আলিয়েভ বলেন, আজারবাইজান দৃঢ়ভাবে ‘এক-চীননীতি’ মেনে চলবে। তাইওয়ান চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতীয় পুনর্মিলন অর্জনের জন্য চীন সরকারের সকল প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে আজারবাইজান। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উদ্যোগে মানবজাতির ভাগ্যের অভিন্ন কল্যাণের সমাজ ও তিনটি বিশ্ব প্রস্তাব, বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধের জন্য অনুকূল। আজারবাইজন এসব প্রস্তাবের প্রশংসা ও সমর্থন করে। তাঁর দেশ চীনের সাথে সার্বিক কৌশলগত অংশীদরিত্বের সম্পর্ক জোরদার করতে, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায় সহযোগিতা উন্নত করতে, ডিজিটাল অর্থনীতি, সবুজ জ্বালানিসম্পদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক। এ ছাড়াও, দু’দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুগুলোয় দু’দেশের সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। বৈঠকের পর দুই প্রেসিডেন্ট ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ও আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের মধ্যে একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার যৌথ বিবৃতি’ স্বাক্ষর করেন এবং যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণ, ন্যায়বিচার, সবুজ উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতি, বৌদ্ধিক সম্পত্তি, মহাকাশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ২০টি সহযোগিতা দলিল স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেন।
সূত্র: সিএমজি