Saturday, April 26
Shadow

অ্যান্টার্কটিকায় ছিনলিং স্টেশনে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সাফল্যগাথার নেপথ্যে


দক্ষিণ মেরুতে আছে চীনের ছিনলিং গবেষণা স্টেশন। সেখানে প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এতে করে চীন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে অ্যান্টার্কটিকার চরম আবহাওয়াতেও সবুজ শক্তি ব্যবহারে বড় সাফল্য পেল।

antarctica

এই প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী সুন হোংবিন জানান, ২০২৪ সালের ১ মার্চ চালু হওয়া এই স্টেশনের গবেষণা সরঞ্জাম ও বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করছে। এতে কোনো কার্বন নির্গমন হয়নি। এর মাধ্যমে চীনের অ্যান্টার্কটিক গবেষণা ‘ডিজেল যুগ’ থেকে সবুজ জ্বালানির নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।

এই সিস্টেমের ৬০ শতাংশ শক্তি আসে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ থেকে। সূর্যালোক বা বাতাস না থাকলে শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে স্টোর করা হাইড্রোজেন।

এই অত্যাধুনিক সিস্টেমের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল তীব্র ঠান্ডা, শক্তিশালী বাতাস, তুষারঝড় এবং অল্প অক্সিজেনের মতো চরম পরিবেশে যন্ত্রপাতি সচল রাখা। তাইইউয়ান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত ‘ডিজিটাল টুইন’ ল্যাবরেটরিতে এসব চরম পরিস্থিতি অনুকরণ করে যন্ত্রাংশগুলো পরীক্ষা করা হয়। ল্যাবটি অ্যান্টার্কটিকার ১০টি চরম পরিবেশ–যেমন তীব্র ঠান্ডা, তুষারঝড়, তীব্র অতিবেগুনি রশ্মি—ইত্যাদি অনুকরণে সক্ষম।

বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩০টি অ্যান্টার্কটিক স্টেশনে পরিচ্ছন্ন শক্তি ব্যবহৃত হলেও, সেগুলোর বেশিরভাগ এখনো পুরোপুরি জ্বালানি নির্ভর। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ স্টেশন এখনো ডিজেল-ভিত্তিক, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই প্রেক্ষাপটে চীনের এই অগ্রগতি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বড় অবদান রাখতে পারে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ শক্তি উৎপাদক দেশগুলোর একটি হিসেবে চীন ২০১৭ সালে ‘সবুজ অনুসন্ধান’ ধারণা চালু করে। গত বছর তাইইউয়ান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি ১২ বছরের পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে অ্যান্টার্কটিক স্টেশনগুলোকে সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন শক্তি ব্যবস্থার আওতায় আনা যায়।

সুন হোংবিন বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহেও কাজে লাগানো যেতে পারে।’

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *