
ভুয়া নথিপত্র ও বিদেশে ভিক্ষাবৃত্তির মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিদেশ থেকে ফেরত আসা পাকিস্তানিদের পাসপোর্ট বাতিলের কার্যক্রম শুরু করেছে দেশটির সরকার। এমন সিদ্ধান্তের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতে এই ধরনের অনৈতিক ও অবৈধ কাজে তাদের অনুৎসাহিত করা এবং বিদেশে প্রকৃত কর্মীদের সম্মান ও সুযোগ রক্ষা করা।
পাকিস্তানের প্রবাসীকল্যাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ৭ হাজার ৮০০ পাকিস্তানিকে বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদভুক্ত (GCC) দেশগুলো থেকে ফেরত এসেছেন।
খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের দেশে ফেরার পর তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ কাজের জন্য প্রথম তথ্য রিপোর্ট (এফআইআর) দায়ের করা হবে। একইসঙ্গে, পাঁচ বছরের জন্য তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ তালিকাভুক্তদের ‘পাসপোর্ট কন্ট্রোল লিস্ট’-এ অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করেছে, যাতে তারা পুনরায় বিদেশে যেতে না পারেন।
এই প্রসঙ্গে চলতি সপ্তাহে সিনেটের প্রবাসীকল্যাণ ও মানবসম্পদ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়। কমিটি বিদেশে অবৈধভাবে মানুষ পাঠানোয় জড়িত বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করারও সুপারিশ করেছে।
বর্তমানে প্রায় ৫৫ লাখেরও বেশি পাকিস্তানি নাগরিক সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন উপসাগরীয় দেশে কর্মরত রয়েছেন। তাদের বৈদেশিক আয় পাকিস্তানের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই অবৈধ উপায়ে বিদেশে যাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপকে অনেক প্রবাসী পাকিস্তানিই স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে প্রকৃত ও দক্ষ কর্মীরা বিদেশে কাজের সুযোগ পেতে আরও সুবিধা পাবেন এবং ভিসা প্রক্রিয়াও সহজ হবে।