ফিয়াদ নওশাদ ইয়ামিন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি : এক সময় বিকেল মানেই ছিল মাঠে ছুটে যাওয়া। পাড়া-মহল্লার মাঠগুলো কিশোরদের প্রাণের জায়গা। এখন সেই মাঠগুলো হারিয়ে গেছে বহুতল ভবনের নিচে, কোথাও মার্কেট, কোথাও পার্কিং।

তারপর প্রশ্ন তোলা হয়—“তরুণরা এত মোবাইলমুখী কেন?”
একটা জেনারেশনকে বোঝানো হয়েছিল, বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়ার চেয়ে টিউটরের কাছে বসা বেশি জরুরি। তারা মাঠ ছেড়ে পড়ার টেবিলে গেল। আর মুরুব্বিরা দেখলেন, মাঠ ফাঁকা ফেলে না রেখে সেখানে ইমারত তুললে সেটা বেশি ‘প্র্যাকটিকাল’।
ধীরে ধীরে বেঁচে থাকার সব সুস্থ আনন্দের পথ বন্ধ হতে থাকল। তরুণরা সেটা রিপ্লেস করল মোবাইল, গেম, রিলেশনশিপ, আর কখনও কখনও গ্যাং দিয়ে।
তারপর প্রশ্ন তোলা হয়—“তরুণরা এত মোবাইলমুখী কেন?”
আসলে প্রশ্নটা উল্টো হওয়া উচিত—তাদের আসল বিকল্পটুকু কেড়ে নিল কে? খেলাধুলাকে যখন ‘সময় নষ্ট’ বলা হয়, মাঠগুলোকে যখন ‘অব্যবহৃত জমি’ ধরা হয়, তখন তাদের চোখ পর্দায় আটকে যাওয়া কি খুব অস্বাভাবিক?
এখন প্রশ্নটা পরিষ্কার হওয়া উচিত: এই প্রজন্ম এমন হয়নি, তাদের তৈরি করা হয়েছে। আমরা যখন মাঠ, আকাশ, খেলাধুলার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছি, তখন তাদের হাতে আর কিছুই নেই—সুযোগ নেই নিজেকে আবিষ্কার করার, খেলাধুলার মাধ্যমে শিখে নেয়ার।
তাদের বেড়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক সমর্থন ছিল না। আর তাই আজকের প্রজন্ম দিশেহারা। ভুলে গেলে চলবে না, এরা শুধু স্মার্টফোনের কারণে নষ্ট হয়নি, বরং সামাজিক অবকাঠামো এবং মনোভাব-এর কারণে তাদের হাতে সরঞ্জামটা বদলে গেছে।
তাদের ফেরাতে হলে মাঠ ফিরিয়ে দিতে হবে, কারণ মাঠ কেবল শারীরিক বিকাশের স্থান নয়—এটা সামাজিক মূল্যবোধ, চরিত্র ও আত্মবিশ্বাস গঠনের জায়গা।
অন্যথায়, এই প্রজন্মের ভবিষ্যত হয়তো শুধুই কাচের পর্দার মধ্যে বন্দী হয়ে যাবে।