Sunday, July 6
Shadow

সাহিত্য

The stories and poetry of Bangladeshi writers and poets will be published in this category. Bangladesh has many promising writers who we believe can easily make their own place in the world literature arena.

আশা-নিরাশার গল্প

ফিচার, সাহিত্য
শাহজালাল সরকার:প্রায় চার বছর ধরে ঢাকা শহরের শ্যামপুর-পোস্তগোলা এলাকায় রিকশা চালায় আজগর হোসেন। রিকশাটা নিজের নয়, ভাড়া করা। দিনশেষে যা রোজগার করে, এর নির্দিষ্ট একটা অংশ দিয়ে দিতে হয় মালিককে। আজগর হোসেনের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের ভবেরচরে। শ্যামপুর রেল লাইনের পূর্ব পাশে স্ত্রী ও ছোট দুটি মেয়ে নিয়ে মাসিক ৩০০০ টাকা ভাড়ায় একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করে আজগর। আনুমানিক বছরদেড়েক যাবৎ পেটের সমস্যায় ভুগছেন আজগর। পেটজ্বালা, বুকজ্বালা ও পেটব্যথা সহ আরও আছে গলার নিচের অংশে ঘা ঘা ভাব। সঙ্গীদের সাথে সে বিষয়টা নিয়ে শেয়ার করে প্রতিনিয়ত। সাথীদের কেউ কেউ ওষুধ সেবন করতে বলেন।  আমাদের দেশে তো রোগীর চেয়ে চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি! শরীরের একটা অসুবিধার কথা প্রকাশ করা মাত্রই অনেকে অনেক রকম ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিতে দেরি করে না। আবার এ কথাও অনেকে বলেন, "ডাক্তারদের কাছে গিয়া কাম নাই। এক বোঝাই পরীক্ষা...

স্মৃতি, নিসর্গ ও নিঃসঙ্গতার কাব্যভুবন

ফিচার, সাহিত্য
বাংলা সাহিত্যে জীবনানন্দ দাশের আবির্ভাব যেন এক অদৃশ্য ঝড়ের মতো—নীরব, ধীর, কিন্তু গভীরতর এক আলোড়ন জাগানো। বাংলা কবিতার পরম্পরায় যখন রবীন্দ্রনাথের ছায়া এতটাই বিস্তৃত যে অন্য সব কণ্ঠ যেন তাতে ঢাকা পড়ে যায়, তখনই আবির্ভূত হন জীবনানন্দ—নিজস্ব এক ভাষা, ছন্দ ও ভাবনাজগত নিয়ে। তাঁর কাব্যধারায় রয়েছে এক গভীর মৌনতা, ধ্যানমগ্নতা এবং প্রকৃতির রহস্যময় নীরবতা। তাঁর কবিতা যেন শব্দের পেছনে হারিয়ে যাওয়া এক জীবনদর্শনের অনুসন্ধান। ‘নির্জনতা’, ‘নিসর্গ’, ‘স্মৃতি’, ‘আত্মদহন’—এই সবকিছুর সাথে মিশে গড়ে উঠেছে জীবনানন্দের কাব্যভুবন, যা তাকে বাংলা আধুনিক কবিতার অন্যতম প্রধান কণ্ঠে পরিণত করেছে। জীবনানন্দের কবিতা একদিকে যেমন অতীত স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে, অন্যদিকে তেমনি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকে গভীর এক বিষণ্নতা ও আশঙ্কার চোখে। তাঁর কবিতায় বারবার ফিরে আসে স্মৃতির শহর বরিশাল, বটতলা, নিঝুম মাঠ, সন্ধ্যার আলো কি...
বন্ধু যখন বনের অতিথি: জীবনের এক অন্যরকম দেখা

বন্ধু যখন বনের অতিথি: জীবনের এক অন্যরকম দেখা

ফিচার, মনের বাঁকে
মো. আশিকুজ্জামান, বাকৃবি- আগের দিন রাতে মেসেঞ্জার গ্রুপে সি আরের মেজেজ- আজিমুন নাহার ম্যামের কড়া নির্দেশ সবাইকে সকাল ৬টায় ক্যাম্পাসের হ্যালিপ্যাডে উপস্থিত থাকতে হবে, দেরি করা যাবে না। দেরি করলে যে আর ট্যুরে যাওয়া হবে না। মোটামুটি একটি নির্ঘুম রাত কাটানোর পরেও ৩ মিনিট লেট করে ফেললাম! ভাগ্য ভালো বাস ৬টার সময় ক্যাম্পাস ছেড়ে যায় নি। বাস ছাড়তে ছাড়তে বেজে যায় সাড়ে ৬টা।  জীবনের সব দিন আসলে একরকম হয় না। কিছু দিন হৃদয়ের পাতায় স্থায়ীভাবে গেঁথে থাকে। পড়ালেখা, ক্লাস, ল্যাব, টিউটোরিয়াল আর পরীক্ষার চাপে যখন নিশ্বাস নেওয়ারও ফুরসত নেই, তখন হঠাৎ পাওয়া এক বিকেল হয়ে ওঠে জীবনের রঙিন পরশ। বলছি ২৪ মে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় ভ্রমণের কথা। সে সফর শুধু শিক্ষামূলক ছিল না, ছিল ভালোবাসা...

পুতুলবাজির খেলা 

কবিতা, ফিচার, সাহিত্য
আসাদুজ্জামান খান মুকুল  রক্তিম রবি স্তিমিত যখন আবিরের আভা মেখে, দেখি ক্রমে ক্রম আঁধার রজনী ধরণী দিয়েছে ঢেকে। প্রভাতের রবি দিয়েছিল উঁকি  যবে জীবনের পর, কলরোল কল কোলাহলে মাতি বাঁধতে সুখের ঘর। শূন্যের ঘড়া পূর্ণ্যের তরে সর্বদা রত থাকি, ভাবিনি তো কভু সোনালী আলোক তমসায় দিবে ঢাকি। জীবনযুদ্ধে করেছি লড়াই  উন্নত রেখে শির, আজিকে আমার ত্রাসে কাঁপে বুক ছাড়তে হবে যে নীড়! আলোর ভুবনে বিমোহিত হয়ে  খেলেছি রঙের খেলা, পুতুলবাজির খেলায় কেবল  ফুরায় দিবস বেলা।...
অন্যের জীবন আলোকিত করে নিজেই এখন অন্ধকারে

অন্যের জীবন আলোকিত করে নিজেই এখন অন্ধকারে

ফিচার, মনের বাঁকে, সাহিত্য
মোঃ ফরমান উল্লাহ : হারিকেন ছিল এক সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ লাইট। হারিকেন ছাড়া শিক্ষার্থীরা ছিল অসহায়। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই প্রথম কাজ ছিল রাতে পড়ার টেবিলের জন্য হারিকেন পরিষ্কার করা। এটা ছিল শিক্ষার্থীদের নিত্য দিনের কাজ। হারিকেন ছাড়া পড়ার টেবিল আলোকিত করার অন্য কোন মাধ্যম তেমন ছিল না। যারা নিম্নবিত্ত পরিবারে ছিল তারা হারিকেনের পরিবর্তে কুপি বাতি ব্যবহার করতো। নব্বই দশকের দিকেও হারিকেনের প্রচলন ছিল। তখনও বিদ্যুতের ছোঁয়া পায়নি অনেকে। যারা শহরে বাস করতো তাদের ঘরে হয়তোবা বিদ্যুতের আলো জ্বলত। তারা লোডশেডিং এর ভয়ে প্রত্যাকের ঘরে বিকল্প হিসাবে হারিকেন সংরক্ষনে রাখত। এই হারিকেনের আলোয় আলোকিত হয়েছে কোটি শিক্ষার্থীর জীবন। বর্তমানে বিদ্যুতের সংস্পর্শে হারিকেনের ব্যবহার নাই বললেই চলে। যে হারিকেন অন্যের জীবন আলোকিত করেছে সে-ই এখন অন্ধকারে পতিত হয়েছে। বর্তমান যুগে অনেকেই হারিকেন চিনবে না ...
বিকেলের আকাশ, এখন শুধুই স্মৃতি?”

বিকেলের আকাশ, এখন শুধুই স্মৃতি?”

মনের বাঁকে, সাহিত্য
ফিয়াদ নওশাদ ইয়ামিন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি : এক সময় বিকেল মানেই ছিল মাঠে ছুটে যাওয়া। পাড়া-মহল্লার মাঠগুলো কিশোরদের প্রাণের জায়গা। এখন সেই মাঠগুলো হারিয়ে গেছে বহুতল ভবনের নিচে, কোথাও মার্কেট, কোথাও পার্কিং। তারপর প্রশ্ন তোলা হয়—“তরুণরা এত মোবাইলমুখী কেন?” একটা জেনারেশনকে বোঝানো হয়েছিল, বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়ার চেয়ে টিউটরের কাছে বসা বেশি জরুরি। তারা মাঠ ছেড়ে পড়ার টেবিলে গেল। আর মুরুব্বিরা দেখলেন, মাঠ ফাঁকা ফেলে না রেখে সেখানে ইমারত তুললে সেটা বেশি ‘প্র্যাকটিকাল’। ধীরে ধীরে বেঁচে থাকার সব সুস্থ আনন্দের পথ বন্ধ হতে থাকল। তরুণরা সেটা রিপ্লেস করল মোবাইল, গেম, রিলেশনশিপ, আর কখনও কখনও গ্যাং দিয়ে। তারপর প্রশ্ন তোলা হয়—“তরুণরা এত মোবাইলমুখী কেন?” আসলে প্রশ্নটা উল্টো হওয়া উচিত—তাদের আসল বিকল্পটুকু কেড়ে নিল কে? খেলাধুলাকে যখন ‘সময় নষ্ট’ বলা হ...
চীনা সংস্কৃতি প্রচার ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারে কবিতা মেলা

চীনা সংস্কৃতি প্রচার ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারে কবিতা মেলা

সাহিত্য
চীনা সংস্কৃতির মোহনীয়তা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক বিনিময়ের উদ্দেশ্যে দুইশো কবি ও কবিতাপ্রেমীর মিলনমেলায় শুরু হয়েছে ‘শতবর্ষী লাইলাক কাব্য মেলা ২০২৫’। শুক্রবার বেইজিংয়ে চায়না মিডিয়া গ্রুপ ও বেইজিং সিছং জেলা পিপলস গর্ভরমেন্টের যৌথভাবে আয়োজন করেছে বার্ষিক এই কবিতা উৎসবের।ৎ এ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একসঙ্গে বিভিন্ন পরিবেশনা উপস্থাপন করেন বিভিন্ন বয়সের শিল্পীরা। আর এই আয়োজনে বিশ্বব্যাপী চীনা কবিতা সংগ্রহের উদ্যোগ শুরু করা হয়েছে। এবারের উৎসবে আন্তর্জাতিক অতিথিদের জন্য সাংস্কৃতিক বিনিময়কে তুলে ধরতে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এলাকা, যার মধ্যে রয়েছে সাহিত্য আড্ডা, আবৃত্তি কেন্দ্র এবং কবিতা ও সঙ্গীতের মিলনস্থল। মরক্কোর এক কবি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বিনিময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন একে অপরের সংস্কৃতিকে বুঝি, তখন একে অপরের প্রতি বোঝাপড়াও গভীর হয়। চীন এখন বিভিন্ন দেশের সঙ্...
থমাস বাটার উত্তরাধিকার: বাংলা ভূখণ্ডে তার প্রভাব

থমাস বাটার উত্তরাধিকার: বাংলা ভূখণ্ডে তার প্রভাব

সাহিত্য
যখন বাটার জুতা মনে আসে, তখন আমরা শুধুমাত্র দৈনন্দিন জীবনে ফুটওয়্যারটির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠার কথা মনে করি না—যেটি জীবনযাত্রা এবং গ্রাহক চাহিদার পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে—বরং আমরা এক অপ্রতিম ব্যক্তিত্বের কথাও মনে করি, যিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত: উইলিয়াম এ.এস. আউডারল্যান্ড। একজন ডাচ নাগরিক এবং ঢাকা বাটা শু কোম্পানির প্রাক্তন উৎপাদন ব্যবস্থাপক, আউডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি যাকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সাহসী এবং সক্রিয় ভূমিকার জন্য 'বীর প্রতীক' সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। বাটা ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যা জুতাকে বিলাসিতা থেকে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তার রূপান্তরিত করেছে, জুতা সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করে, তবে গুণমানের প্রতি কোনো আপস না করে—যা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এক এমন সময়ে, যখন বৃহত্তর জনগণের জীবিকা সীমিত ছিল, বিশেষ করে শতাব্দীর শেষের দিকে। পৃথিবীজুড়ে ...

কবিতা: বারুদের ঋতু

কবিতা, সাহিত্য
ফিলিস্তিনে চলমান বর্বরতা ও অমানবিক পরিস্থিতি নিয়ে কবিতাগুলো লিখেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হৃদয় পান্ডে ১বারুদের ঋতু কাল থেকে ফুল আর না ফুটুক,বারুদ ফুটুক, ধোঁয়ার গন্ধে ভরে উঠুক আকাশ।জুতোর তলায় চাপা পড়বে বিস্ফোরণের ছাই।কাল থেকে শুধু বারুদের ঋতু, আগুনের বসন্ত। ১৯ মার্চ ২.ধুলোর জলোচ্ছ্বাস কোনো ডানাও নেই,তবু মানুষ উড়ে যায় বাতাসেবোমার শব্দে,নামহীন ছিন্নভিন্ন পরিচয়ে। মাটির টান হারায়,নেমে আসে ধুলোর জলোচ্ছ্বাস,আর আকাশ কেবল দেখে—যেমন সবসময় দেখে। ৩ এপ্রিল ৩.অপেক্ষা মানুষ উড়ে যায় বিস্ফোরণে,কিন্তু কেউ বলতে পারে নাএই শহরে মানুষ ছিল।তাদের গল্প সব ছিন্ন হয়েএখন উড়ে বেড়ায়মৃত্যুর এই কৃত্রিম আকাশে। গাজা কাঁদে না—কারণ কান্নার শব্দও এখন নিষিদ্ধ।শুধু পৃথিবীর এক কোণে রক্তমাখা শিশুনীরব চোখে তাকিয়ে থাকে—শুধু অপেক্ষা আরও একটি বিস্ফোরণের। ৬ এপ্রিল ৪.দেয়াল মানুষ উড়ে যায় বিস্ফরণে...
হেলদি ক্লাবের হুলস্থূল

হেলদি ক্লাবের হুলস্থূল

গল্প, সাহিত্য
জুয়েল আশরাফ : পদ্মপুর গ্রামের স্কুলে একটা আজব ক্লাব ছিল—'হেলদি ক্লাব'। এই ক্লাবের সদস্যরা ছিল বিশাল একদল দুষ্টু ছেলেমেয়ে, আর তাদের নেতা ছিল বোকা রাজু! রাজু মোটেও স্বাস্থ্য সচেতন ছিল না। ওর খাবারের লিস্টে থাকত—চিপস, চকোলেট, আইসক্রিম, আর কোল্ড ড্রিংকস। একদিন, হেডস্যার স্কুলের সব ছাত্রকে ডেকে বললেন, এবার থেকে স্কুলে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য 'হেলদি ক্লাব' তৈরি করা হবে! ক্লাবের নেতা হবে রাজু! রাজুর চোয়াল ঝুলে গেল। ওর মাথায় শুধু চকোলেট ঘুরছিল, আর এখানে তাকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে? কিন্তু হেডস্যার আরও ঘোষণা দিলেন, যে দল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করবে, তাদের জন্য থাকবে স্পেশাল পুরস্কার! এটা শুনেই রাজুর চোখ চকচক করে উঠল! রাজু ভাবল, পুরস্কার তো চাই, কিন্তু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন? নাহ, এটা কঠিন! তাই ও এক ধূর্ত বুদ্ধি আঁটল! ওর বন্ধুরা—সুমন, টুকুন, আর পল্টু সব...