
নান্দাইলে আজও বিক্রিত জমি রেজিস্ট্রি করে
না দিয়ে উল্টো জমি থেকে বেদখলের পায়তারা
ফরিদ মিয়া, নান্দাইল ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড নিভিয়াঘাটা গ্রামের নিরীহ কৃষক আকবর আলী প্রায় ২৫ বছর আগে একই গ্রামের প্রতিবেশী চাচাতো ভাই আবুল কালাম ও সিদ্দিক মিয়ার নিকট থেকে ঘাটা মৌজায় হালদাগ ১১২০, সাবেক দাগ ৯৩২, ১৯৮নং খতিয়ানে ১৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। যা বর্তমানে ভোগ দখলে রয়েছে। বিক্রয়কারী আবুল কালাম ও সিদ্দিক মিয়া উক্ত জমি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে উল্টো ক্রেতাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি সহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে আকবর আলী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘ ২৫/২৬ বছর পূর্বে আবুল কালাম একটি হত্যা মামলায় আসামী হয়ে জেল হাজতে ছিলেন। এসময় টাকার বিশেষ প্রয়োজন বিধায় জমি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। আবুল কালামের বড় ভাই সিদ্দিক মিয়া, তার শ্যালক নূরুল হক, ভাইরা ভাই সুজন মিয়া তখন বাড়িতে থেকে দুই ভাইয়ের ১৭ শতাংশ জমি বিক্রয় বাবদ আকবর আলীর নিকট থেকে নিম্ম স্বাক্ষীগন মো: আব্দুল জলিল, কাজী গোলাম মোস্তফা, কাজি মনজুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য সহিদ মিয়া, ডা: লিটন, রাসেল মিয়া, নূরুল হক, সুজন মিয়ার উপস্থিতিতে এবং আবুল কালাম জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে এসে জমি রেজিস্ট্রী করে দিবে বলে জমির নিধারিত সর্ব সাকুল্যে টাকা বুঝিয়ে নেন। এবিষয়ে এলাকা গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অবহিত রয়েছে। পরে আবুল কালাম জামিনে বাড়িতে আসে এবং দলিল করে দিবে দিবে বলে দীর্ঘ বছর চলে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে দখলীয় জমি দলিল করে দেওয়ার জন্য আবুল কালাম ও সিদ্দিক মিয়ার নিকট গেলে তারা জমি বিক্রি করে নাই এবং জমি থেকে উচ্ছেদ করে দিবে বলে হুমকী দেন। পরে এবিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ স্বাক্ষীগনের নিকট বিস্তারিত জানালে বিভিন্ন এলাকার মাতাব্বরদের নিয়ে পর পর ২/৩টি সালিশ দরবার করে মিমাংসা করার চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হয়। এলাকার লোকজনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে শুক্রবার (২৫ জুলাই) পুনরায় জমি সংক্রান্ত বিষয়টি মিমাংসার লক্ষে উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের মাতাব্বর সহ সর্বস্তরের জনসাধারনের উপস্থিতিতে সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উক্ত সালিশ দরবারে সমাজ সেবক আব্দুল বারেকের সভাপতিত্বে ও ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার রোকনুজ্জামানের সঞ্চালনায় সালিশ দরবারে আবুল কালাম ও সিদ্দিক মিয়ার এহেন কর্মকান্ডে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মো: আব্দুল জলিল, কাজী গোলাম মোস্তফা, আব্দুল মান্নান, কাজি মনজুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য সহিদ মিয়া, ডা: লিটন, রাসেল মিয়া, নূরুল হক, সুজন মিয়া, আনিস, মোফাজ্জল সহ প্রমুখ। এসময় বিজ্ঞ দরবারিগণ সহ যুব সমাজ আবুল কালামের এই বেইমানিকে সমাজের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হিসাবে আক্কা দেন। অপরদিকে আকবর আলীর নিকট জমি বিক্রয় করার বিষয়ে সালিশ দরবারে শ্যালক নূরুল হক, ভাইরা ভাই সুজন মিয়া জমি ক্রয়- বিক্রয়ের বিষয়টি দরবারিকগনের সামনে স্বীকার করেন। এবিষয়ে ইউপি সদস্য রোকনুজ্জামান বলেন, আকবর আলী নিকট জমি বিক্রয়ের বিষয়টি আমি সহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও অবহিত আছেন। এসময় তিনি বলেন, আমি টুকটাক জমি মাপ-ঝুপের কাজ করি বিধায় জমি বিক্রয়কারী আবুল কালামের ছেলে সহ আব্দুল জলিল, শ্যালক সুজন মিয়া, ভাইরা ভাই নূরুল হক, সমাজ সেবক কাজী গোলাম মোস্তফা, কাজি মনজুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য সহিদ মিয়া, ডা: লিটন, রাসেল মিয়া ছাড়াও এলাকার বেশ কয়েকজনের উপস্থিতিতে আমি (রোকনুজ্জামান) এই জায়গা মেপে আকবর আলীকে বুঝিয়ে দেই। যা এখনও ভোগ দখল করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি আবুল কালাম ও বড় ভাই সিদ্দিক মিয়া এলাকার একটি কুচক্রী মহলের ইন্দে জায়গা বিক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে এবং সালিশ দরবারও অমান্য করে। এ নিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং এলাকায় চাঞ্চ্যকর সৃষ্টি হয়েছে। এবিষয়ে বিজ্ঞ দরবারিগণ সহ সর্বসাধারণ জনগন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহ প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।