
জুলাই ২, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বনভূমিভিত্তিক খাদ্য উৎপাদনে এসেছে রেকর্ড পরিমাণ সাফল্য। বিশেষ করে ছায়াযুক্ত স্থানে বনভূমির নিচে ছায়াযুক্ত পরিবেশে সবজি, ওষধি, ফল চাষ ও প্রাণী পালন করে কৃষকদের আয় বাড়াতে এই প্রকল্প চালু করেছে চীন সরকার। এতে মাশরুম, কিশমিশ, জিনসেং, পাইন নাটসহ নানা রকম বনজ খাদ্যের চাষ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে। এ ব্যবস্থায় চিয়াংসির একটি ফরেস্ট ফার্মে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস উৎপাদন বেড়েছে ১০ শতাংশ। এখন ২৪০০টিরও বেশি কাউন্টিতে চলছে বনভিত্তিক খাদ্য উৎপাদন, যার ফলন বছরে গড়ে ২০ কোটি টন ছাড়িয়েছে।
‘আন্ডার-ফরেস্ট ইকোনমি’ নামে পরিচিত এই উদ্যোগে বনভূমির ছায়ায় চাষ হচ্ছে নানা জাতের বনজ খাবার। কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং সার্বিক গ্রামীণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে স্থানীয় প্রশাসনই নিয়েছে এ ধরনের নানা উদ্যোগ।
আন্ডার ফরেস্ট অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোজ্য তেল, খেজুর, পাইন নাট, মাশরুম ও জিনসেংসহ নানা বনজ পণ্য।
চীনের পূর্বাঞ্চলের চিয়াংসির কুয়াংচাং কাউন্টিতে অবস্থিত একটি পরিবেশবান্ধব সরকারি বন খামারে সমবায়ের কর্মীরা ব্যস্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আহরণে। সরকারের সহায়তায় গড়ে ওঠা ছিটানো সেচব্যবস্থায় প্রায় ৬৭ হেক্টর বনজমিতে চাষ হয়েছে এই মাশরুম। উৎপাদনও বেড়েছে আগের চেয়ে ১০ শতাংশ।
ছত্রাক চাষ সমবায়ের প্রধান শিয়ে ইউয়ানছাই জানালেন, ‘সেচব্যবস্থার কারণে আমাদের বার্ষিক মুনাফা ১ লাখ ৫০ হাজার ইউয়ান বেড়েছে।’
ইয়ুননান প্রদেশের মেংলা কাউন্টিতে বেতগাছের গোড়ায় জন্মানো নরম ও ঝুঁলানো এক প্রজাতির ছত্রাক, যা স্থানীয় কৃষকদের পকেটে এনেছে বাড়তি আয়। সরকারও এ ছত্রাক চাষে সহায়তা দিচ্ছে।
মেংলা শহরের বিজ্ঞান প্রচার কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ চাং ইউশেং জানালেন, ‘আমাদের পণ্য কুনমিংয়ের শুকনো খাদ্যবাজারে বিক্রি হয়। আমরা যত উৎপাদন করি, সবই কিনে নেওয়া হয়।’
বনভিত্তিক খাদ্য এখন চীনের তৃতীয় বৃহত্তম কৃষিপণ্য। শস্য ও সবজির পরই এর স্থান। জাতীয় বন ও তৃণভূমি প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চীনের ২৮০০টি কাউন্টির মধ্যে ২৪০০টির বেশি কাউন্টিতে এমন নতুন অর্থনীতির বনায়ন হয়েছে। বছরে বনভিত্তিক খাদ্য উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২০ কোটি টন। মাথাপিছু উৎপাদন প্রায় ১৪০ কেজি—যা কিনা বিশ্বে সর্বোচ্চ।