
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা ইস্যু ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দুই দেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক যোগাযোগ ও উচ্চপর্যায়ের আলোচনার ফলেই এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে বলে রোববার (৪ মে) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হামৌদি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই অগ্রগতির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা সহজীকরণ, বিনিয়োগ সহযোগিতা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলোচনা হয়েছে এবং এর আওতায় ছয়টিরও বেশি মন্ত্রণালয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর সম্পন্ন হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, ঢাকায় অবস্থিত আমিরাত দূতাবাস বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা ইস্যু করছে। এর পাশাপাশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের জন্য বাল্ক ভিসা ইস্যুর প্রক্রিয়া দ্রুততর করা হয়েছে, যাতে করে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ আরও জোরদার হয়।
বিশেষ করে আমিরাতের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় দক্ষ কর্মী নিয়োগে অনলাইন সিস্টেম আবার চালু করেছে। এর আওতায় বিপণন ব্যবস্থাপক, হোটেলকর্মীসহ পেশাদারদের জন্য ভিসা ইস্যু করা শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া নিরাপত্তা খাতেও বড়সড় উদ্যোগ নিয়েছে আমিরাত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশি নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য ৫০০টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে এবং আরও ১,০০০ ভিসা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হামৌদি আশ্বস্ত করেন যে, ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক ভিসা ইস্যুর পাশাপাশি বিশেষ মানবিক ও সহানুভূতিশীল কেসগুলোর ক্ষেত্রেও নমনীয়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সুপারিশকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী আমিরাত সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই অগ্রগতি দুই দেশের জনগণের জন্য আশার বাতিঘর হয়ে উঠবে। বিশেষ করে যারা কর্মসংস্থান বা ব্যবসায়িক ভ্রমণে আগ্রহী তাদের জন্য এটি বড় সুযোগ।”
তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (CEPA) নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং জানান, উভয় দেশ ইতোমধ্যেই এই চুক্তির জন্য রেফারেন্স শর্তাবলিতে সম্মত হয়েছে।
এই বৈঠকে আরও জানানো হয়, চলতি মাসের শেষ দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রিসভার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে, যা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশি কর্মজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকদের জন্য সুখবর। আমিরাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে কর্মসংস্থানের নতুন দুয়ার খুলে যাওয়ায় প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।