Wednesday, July 30
Shadow

স্পেনকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের নারী ইউরো ফুটবল জয়: স্পেনের আক্ষেপ

নারী ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে বহুবার কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু বারবার ফিরে এসে তারা প্রমাণ করেছে—শুধু দক্ষতায় খেলা দখলে রাখা যায়, কিন্তু জিততে হলে লাগে সিংহীর মতো হৃদয়। আর তাই স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে তারা আবারও ইউরোপের সেরা হলো।

ফাইনালে টাইব্রেকারে নির্ধারণকারী শটটি জালে জড়ান চলোয়ে কেলি। তার এই সফল পেনাল্টি ইংল্যান্ডকে টানা দ্বিতীয়বার ইউরো শিরোপা এনে দেয়। তবে ম্যাচজয়ী নায়িকা তিনি হলেও, ইংল্যান্ডের প্রতিটি খেলোয়াড়কে নিজেদের শেষ শক্তিটুকু নিংড়ে দিতে হয়েছে স্পেনের বিপক্ষে। কারণ পুরো ম্যাচজুড়ে বল দখল ও খেলার গতি—সবদিকেই এগিয়ে ছিল স্পেন। শুধু স্কোরবোর্ডে নয়।

কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। অনেকেই ভেবেছিল, তাদের অভিযান সেখানেই শেষ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কেলি ও মিশেল আগিয়েমাং গোল করে ম্যাচ টাই করেন এবং পরে টাইব্রেকারে জেতেন, যদিও চারটি পেনাল্টি বাঁচিয়েছিল সুইডেন।

সেমিফাইনালেও একই দৃশ্য। দুর্বল পারফরম্যান্সের পর অতিরিক্ত সময়ের ১১৯তম মিনিটে আবারও কেলির গোলে জয় নিশ্চিত করে ফাইনালের টিকিট কেটে নেয় ইংল্যান্ড।

অন্যদিকে স্পেন ছিল দুর্দান্ত। স্বাগতিক সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে এবং সেমিফাইনালে জার্মানিকে সহজেই হারিয়ে তারা ফাইনালে উঠে আসে। ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালেও এই ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল স্পেন। সেই ম্যাচের পুনরাবৃত্তির ইঙ্গিতই মিলছিল এবার, যখন ২৫তম মিনিটে মারিওনা ক্যালদেন্তে স্পেনকে এগিয়ে নেন।

ইনজুরির কারণে লরেন জেমস মাঠ ছাড়লে তার জায়গায় চলোয়ে কেলি মাঠে নামেন এবং সেই বদলি বদলে দেন ম্যাচের গতি। কেলির পাস থেকেই রুসো গোল করে সমতা ফেরান।

দলের ডিফেন্ডার লুসি ব্রোঞ্জ ও অ্যালেক্স গ্রিনউড একের পর এক কঠিন ট্যাকল সামলে খেলায় টিকে থাকেন। আর অধিনায়ক লিয়া উইলিয়ামসন শেষ সময়ে এমন এক দৌড় দেন যা প্রমাণ করে—এই ইংল্যান্ড দল শেষ মুহূর্তেও হাল ছাড়ে না।

১-১ গোলে ১২০ মিনিট শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই স্পেনের পা কেঁপে ওঠে। গোলরক্ষক হান্না হ্যাম্পটন প্রথমে ক্যালদেন্তে এবং পরে বোনমাতির শট ঠেকান। পরবর্তীতে পারালুয়েলোর শট পোস্টের বাইরে চলে যায়।

শেষে চলোয়ে কেলি বলটি জোরালোভাবে জালে পাঠান। মুহূর্তেই উল্লাসে ফেটে পড়ে ইংল্যান্ড সমর্থকেরা।

ম্যাচ শেষে হ্যাম্পটন বলেন,
এটাই ইংল্যান্ড। এটা আমাদের মুহূর্ত। আমরা ১২০ মিনিট ধরে লড়াই করেছি, স্পেনকে আটকে রেখেছি। শেষ মুহূর্তের কিকটাই সব বদলে দিলো, এবং আমরা তা ঠিকঠাক করেই করেছি।

মাঠে আধিপত্য করেও শিরোপা হারিয়ে হতাশ হবে স্পেন। সাম্প্রতিক সাফল্য সত্ত্বেও বড় মঞ্চে ঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় ফিনিশিং এনে দিতে পারেনি তারা।

অন্যদিকে, ইংল্যান্ড প্রমাণ করেছে—দম বন্ধ করা মুহূর্তগুলোয় স্রেফ প্রতিভা নয়, সাহস আর আত্মবিশ্বাসই জয় এনে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *