
সৈয়দ মুজিবুর রহমান দুলাল, লাকসাম : কুমিল্লার লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে (প্রা:লি:) সংঘটিত দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় ৮ দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) গভীর রাতে চোরের দল হাসপাতালের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষের পেছনের জানালার গ্রীল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে এই দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চোরের দল প্রায় ৩২ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
লাকসাম জেনারেল হাসপাতালের (প্রা:লি:) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী আক্কাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনারদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ হাসপাতালের নানাহ বিষয়ে নিয়ে আলাপ আলোচনা শেষে অফিস কক্ষ বন্ধ চলে যান। পরদিন সকাল পৌনে সাতটার দিকে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রতিদিনের মত ম্যানাজার, সহকারী ম্যানেজার, ক্যারিয়ার এবং চেয়ারম্যান’র কক্ষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার উদ্দেশ্যে গেলে দেখেন যে, সবকিছু ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এ সময় ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মী হাসপাতালের সুপারভাইজারকে অবহিত করেন। সুপারভাইজার তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি দেখেন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। পরে হাসপাতালের ম্যানাজারসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, ম্যানেজারের কক্ষে, সহকারী ম্যানেজার কক্ষে ও ক্যাশিয়ারের কক্ষের আলমারী ও ড্রয়ারগুলো ভাঙ্গা। এছাড়া বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙ্গা। বিভিন্ন ফাইলপত্র এলোমেলো মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। এদিকে হাসপাতালের চেয়ারম্যান’র কক্ষের জানালার দু’টি গ্রীলও কাটা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের কক্ষে আলমারীতে রক্ষিত ড্রয়ারগুলো ভেঙ্গে চোরের দল প্রায় ৩২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এ ছাড়া, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ডিভাইজ বক্সটিও কেটে নিয়ে গেছে চোরের দল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পাশেই অবসরপ্রাপ্ত জনৈক পুলিশ কর্মকর্তার নির্মাণাধীন একটি ভবন রয়েছে। তাঁদের ধারনা ওই নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয়তলা দিয়ে এসে চোরের দল হাসপাতালের চেয়ারম্যান’র কক্ষের জানালার গ্রীল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে এই চুরি সংঘটিত করেছে।
এই দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা চোরের দলের বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
লাকসাম জেনারেল হাসপাতালের (প্রা:লি:) চেয়ারম্যান ও ভাইয়া গ্রুপের পরিচালক মজির আহমেদ জানান, লাকসাম একটি ব্যস্ততম শহর। এ হাসপাতালের আশপাশে আরো বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি বলেন, লাকসামে এমন দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা সত্যি অবাক হওয়ার মতো। এটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর। এই চুরির ঘটনায় প্রথমে লাকসাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ এবং পরে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ সুক্ষ্ম তদন্তের মাধ্যমে আন্তরিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ঘটনার সাথে জড়িত চোরচক্রকে গ্রেপ্তারসহ আইনের আওতায় আনা সম্ভব। অনতিবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এই ব্যাপারে লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা চুরির ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
ওসি বলেন, পুলিশী তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্তসহ দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তারে সক্ষম হবো।