জুয়েল আশরাফ : পদ্মপুর গ্রামের স্কুলে একটা আজব ক্লাব ছিল—’হেলদি ক্লাব’। এই ক্লাবের সদস্যরা ছিল বিশাল একদল দুষ্টু ছেলেমেয়ে, আর তাদের নেতা ছিল বোকা রাজু!
রাজু মোটেও স্বাস্থ্য সচেতন ছিল না। ওর খাবারের লিস্টে থাকত—চিপস, চকোলেট, আইসক্রিম, আর কোল্ড ড্রিংকস। একদিন, হেডস্যার স্কুলের সব ছাত্রকে ডেকে বললেন, এবার থেকে স্কুলে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ‘হেলদি ক্লাব’ তৈরি করা হবে! ক্লাবের নেতা হবে রাজু!

রাজুর চোয়াল ঝুলে গেল। ওর মাথায় শুধু চকোলেট ঘুরছিল, আর এখানে তাকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে?
কিন্তু হেডস্যার আরও ঘোষণা দিলেন, যে দল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করবে, তাদের জন্য থাকবে স্পেশাল পুরস্কার!
এটা শুনেই রাজুর চোখ চকচক করে উঠল!
রাজু ভাবল, পুরস্কার তো চাই, কিন্তু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন? নাহ, এটা কঠিন!
তাই ও এক ধূর্ত বুদ্ধি আঁটল!
ওর বন্ধুরা—সুমন, টুকুন, আর পল্টু সবাই মিলে ঠিক করল, ওরা হেডস্যারের চোখের সামনে শুধু স্বাস্থ্যকর জিনিস খাবে, কিন্তু পিছনে গোপনে সব দুষ্টুমি করবে!
তাদের প্ল্যান:
১. সকালের অ্যাসেম্বলিতে গাজর-মুলা চিবুতে চিবুতে যাবে, যাতে সবাই দেখে ওরা খুব স্বাস্থ্য সচেতন!
২. ব্যাগের মধ্যে সবজি রেখে দেবে, কিন্তু দুপুরে লুকিয়ে আইসক্রিম খাবে!
৩. খেলাধুলার সময় দৌড়াদৌড়ি করার ভান করবে, কিন্তু আসলে গাছের নিচে বসে গল্প করবে!
ওরা ভেবেছিল, সবকিছু ঠিকঠাক চলবে। কিন্তু তখনই এল বিপদ!
একদিন রাজু দুপুরে চিপস খাচ্ছিল, ঠিক তখনই হেডস্যার সেখানে হাজির!
রাজু! তুমি চিপস খাচ্ছ কেন?
রাজু তো ঘাবড়ে গেল! চিপস মুখে নিয়ে সে বলল, স্যার, এটা তো… এটা তো… বিশেষ স্বাস্থ্যকর চিপস! নতুন রিসার্চে দেখা গেছে, চিপস খেলে দৌড়ানোর শক্তি বাড়ে!
হেডস্যার হেসে বললেন, ওহ! তাই নাকি? তাহলে একটা দৌড় দাও তো!
রাজু দৌড় দিতে গিয়ে দেখল, দুই পা কাঁপছে, পেট ভারী লাগছে! দুই সেকেন্ডের মধ্যে সে ধপাস করে পড়ে গেল!
হেডস্যার বললেন, এই হলো স্বাস্থ্যকর চিপসের ফল!
সবাই হাসতে লাগল। রাজুর মুখ লাল হয়ে গেল!
পরের দিন থেকে রাজু আর তার দল সত্যিই স্বাস্থ্য সচেতন হতে শুরু করল। তারা রোজ সকালে দৌড়ানো শুরু করল, টিফিনে ফল আর সবজি আনতে লাগল, আর কোমল পানীয় বাদ দিয়ে শুধু পানি খেতে শুরু করল।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা সবাই আগের চেয়ে অনেক বেশি ফিট আর শক্তিশালী হয়ে গেল!
অবশেষে হেডস্যার ঘোষণা দিলেন, এই বছর ‘হেলদি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন’ হয়েছে রাজুর দল! কারণ ওরা সত্যিই নিজেদের বদলেছে!
রাজু খুশি হয়ে বলল, আমি এখন বুঝতে পেরেছি, স্বাস্থ্য ভালো থাকলে জীবন অনেক বেশি মজার হয়!