Wednesday, June 11
Shadow

৭ কিংবদন্তি ক্রিকেটার অন্তর্ভুক্ত হলেন আইসিসি ‘হল অব ফেমে’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এক জমকালো অনুষ্ঠানে ক্রিকেট ইতিহাস গড়া সাতজন কিংবদন্তি খেলোয়াড়কে আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার লন্ডনের ঐতিহাসিক অ্যাবে রোড স্টুডিওতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ নবনির্বাচিতদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।

এ বছর হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ক্রিকেটাররা হলেন—ম্যাথু হেইডেন, হাশিম আমলা, মহেন্দ্র সিং ধোনি, গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, সানা মীর এবং সারাহ টেলর।

জয় শাহ বলেন, ‘আইসিসি হল অব ফেমের মাধ্যমে আমরা ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের শ্রদ্ধা জানাই, যারা নিজেদের অসাধারণ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ক্রিকেটের ঐতিহ্য গড়েছেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন।’

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই সাত কিংবদন্তির উল্লেখযোগ্য অর্জন—

ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া)
টেস্ট: ১০৩ ম্যাচ | রান: ৮৬২৫ | গড়: ৫০.৭৩
ওডিআই: ১৬১ ম্যাচ | রান: ৬১৩৩ | গড়: ৪৩.৮০
টি-২০আই: ৯ ম্যাচ | রান: ৩০৮ | গড়: ৫১.৩৩

অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী ওপেনার হেইডেন তার শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের জন্য বিশ্বের সেরা বোলারদের কাছে ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। ২০০৭ বিশ্বকাপে ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ২০০৩ ও ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ে এবং টেস্ট ক্রিকেটে অজিদের আধিপত্যে বড় ভূমিকা রেখেছেন।
হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে হেইডেন বলেন, ‘আমার অনেক আদর্শের নাম এই তালিকায় রয়েছে। তাদের পাশে নিজের নাম দেখতে পাওয়া সত্যিই এক অভাবনীয় অনুভূতি।’

হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
টেস্ট: ১২৪ ম্যাচ | রান: ৯২৮২ | গড়: ৪৬.৬৪
ওডিআই: ১৮১ ম্যাচ | রান: ৮১১৩ | গড়: ৪৯.৪৬
টি-২০আই: ৪৪ ম্যাচ | রান: ১২৭৭ | গড়: ৩৩.৬০

দক্ষিণ আফ্রিকার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান আমলা ছিলেন দলের ভরসার প্রতীক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিক (৩১১*)।
তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি পাওয়া অত্যন্ত সম্মানের। বিশেষ করে আমার প্রিয় বন্ধু গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে একই বছরে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্তি—এটি আমার জন্য এক বিশেষ অনুভূতি।’

মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
টেস্ট: ৯০ ম্যাচ | রান: ৪৮৭৬ | ডিসমিসাল: ২৯৪
ওডিআই: ৩৫০ ম্যাচ | রান: ১০৭৭৩ | ডিসমিসাল: ৪৪৪
টি-২০আই: ৯৮ ম্যাচ | রান: ১৬১৭ | ডিসমিসাল: ৯১

ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক ধোনি তার নেতৃত্বে ভারতকে জিতিয়েছেন তিনটি আইসিসি শিরোপা—টি২০ বিশ্বকাপ ২০০৭, ওডিআই বিশ্বকাপ ২০১১ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৩।
ধোনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত। আমি এই সম্মান চিরকাল লালন করব।’

গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)
টেস্ট: ১১৭ ম্যাচ | রান: ৯২৬৫ | গড়: ৪৮.২৫
ওডিআই: ১৯৭ ম্যাচ | রান: ৬৯৮৯ | গড়: ৩৭.৯৮
টি-২০আই: ৩৩ ম্যাচ | রান: ৯৮২ | গড়: ৩১.৬৭

মাত্র ২২ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কত্ব পাওয়া স্মিথ দেশটির ক্রিকেটে এক নতুন যুগের সূচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘এই সম্মান শুধুই আমার নয়, এটি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটেরও জয়।’

ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (নিউজিল্যান্ড)
টেস্ট: ১১৩ ম্যাচ | রান: ৪৫৩১ | উইকেট: ৩৬২
ওডিআই: ২৯৫ ম্যাচ | রান: ২২৫৩ | উইকেট: ৩০৫
টি-২০আই: ৩৪ ম্যাচ | রান: ২০৫ | উইকেট: ৩৮

বিশ্বমানের বাঁহাতি স্পিনার ভেট্টোরি ছিলেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। টেস্টে চার হাজারের বেশি রান ও ৩০০’র বেশি উইকেট নেওয়া হাতে গোনা ক্রিকেটারদের একজন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই তালিকায় নিজের নাম দেখতে পেয়ে আমি গর্বিত এবং আবেগাপ্লুত।’

সানা মীর (পাকিস্তান)
ওডিআই: ১২০ ম্যাচ | রান: ১৬৩০ | উইকেট: ১৫১
টি-২০আই: ১০৬ ম্যাচ | রান: ৮০২ | উইকেট: ৮৯

পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটের পথিকৃৎ সানা মীর হলেন প্রথম পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটার যিনি আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘একসময় স্বপ্ন দেখতাম যেন আমাদের দেশে নারীদের একটি ক্রিকেট দল হয়। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তব হয়েছে।’

সারাহ টেলর (ইংল্যান্ড)
টেস্ট: ১০ ম্যাচ | রান: ৩০০ | ডিসমিসাল: ২০
ওডিআই: ১২৬ ম্যাচ | রান: ৪০৫৬ | ডিসমিসাল: ১৩৮
টি২০আই: ৯০ ম্যাচ | রান: ২১৭৭ | ডিসমিসাল: ৭৪

বিশ্বের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার ব্যাটার সারাহ টেলর ছিলেন ইংল্যান্ডের জয়ের অন্যতম কারিগর।
তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম বড় গর্বের মুহূর্ত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *