
গাজার দিকে রওনা হওয়া আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’-এ হামলা চালিয়ে সেটি দখলে নিয়েছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই জাহাজটি আটক করা হয় এবং পরে সেটিকে ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাহাজটি পরিচালনা করছিল আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)। এটি গাজার ক্ষুধার্ত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী বহন করছিল।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ম্যাডলিন’-এ থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের অপহরণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাহাজটি বেআইনিভাবে দখল করা হয়েছে, নিরস্ত্র নাবিকদের বন্দি করা হয়েছে এবং শিশু খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
জাহাজটির ক্যাপ্টেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তিনি জানান, ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি আটক করলেও কেউ হতাহত হননি।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি আটক করা হয়েছে। তারা এটিকে “সেলফি ইয়ট” এবং “তথাকথিত সেলিব্রিটিদের নাটকীয় প্রচেষ্টা” বলে উল্লেখ করে জানায়, এসবের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে দিয়ে “প্ররোচনামূলক নাটক সাজিয়ে কেবল প্রচারের জন্যই” এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
জাহাজটিতে বিভিন্ন দেশের মোট ১২ জন মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন: গ্রেটা থুনবার্গ (সুইডেন) – পরিবেশ আন্দোলনকর্মী, ব্যাপটিস্ট আন্দ্রে (ফ্রান্স) – চিকিৎসক ও মানবিক কর্মী, ওমর ফায়াদ – আল জাজিরার সাংবাদিক, রিমা হাসান – ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট সদস্য। এছাড়া আরও ছিলেন: ইয়াসেমিন আচার (জার্মানি), থিয়াগো আভিলা (ব্রাজিল), পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, সুলাইব ওর্দু (তুরস্ক), সার্জিও তোরিবিও (স্পেন), মার্কো ফন রেনেস (নেদারল্যান্ডস), রিভা ভিয়া (ফ্রান্স)।
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ থেকে গাজার দিকে কোনো ত্রাণবাহী যান প্রবেশ করতে দেয়নি ইসরায়েল। এর ফলে তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে গাজার জনগণ। অনাহারে বেশ কয়েকজন শিশু মারা গেছে। এই মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং জরুরি ত্রাণ পৌঁছাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজটি গত ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে।