Saturday, May 24
Shadow

অনাস্থা জানিয়ে পূর্ণাঙ্গ ভিসি নিয়োগের দাবি কুয়েট শিক্ষকদের


এম এন আলী শিপলু, খুলনা : বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষক সকলের দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের দায়িত্বে থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করার অভিযোগে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মো. হযরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানিয়ে অতি দ্রুত তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

বুধবার (২১ মে) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভা কক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন এই দাবি জানান।

একই সাথে সরকারকে কুয়েট বান্ধব যিনি সমস্যার সমাধান করে কুয়েটের বিধি-বিধান মেনে, কুয়েটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন এমন যোগ্যতম একজন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। এই দাবি প্রকাশ করার জন্য আগামীকাল বেলা সাড়ে ১১ টায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, উনি (ভিসি) যেহেতু দায়িত্ব নিতে পারছেন না, সেহেতু উনি সম্মানের সাথে সেটা সুরাহা করার জন্য সহযোগিতা করবেন। উনি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তিনি এটা করবেন।

তিনি বলেন, আমরা গত ৪ মে শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা করে ভাইস চ্যান্সেলরকে সাত কর্মদিবস সময় দিয়েছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট, তদন্ত, পরবর্তীতে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মিটিংসহ অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। যাতে আমরা ছাত্র-শিক্ষক দ্রুত ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। সাত কর্ম দিবস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ভাইস চ্যান্সেলর উনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে আটকে রেখেছেন।

এ অবস্থায় ১৮ মে আবার আমরা শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি ভাইস চ্যান্সেলরের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছিলাম। আমরা যে সময় খুব হতাশা নিয়ে এরকম এক সংকটময় পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এবং শিক্ষক অতিক্রান্ত করছি, সেই সময় ভাইস চ্যান্সেলর দাপ্তরিক কাজের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছেন। ১৮ তারিখে উনি আমাদের কাছে বলে যান, পরের দিন, উনি ফিরে আসবেন। এই বিষয়টার একটা দ্রুত সমাধান করবেন। উনি এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেননি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আজ তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি ছিল, সেটার প্রতি উনি কোন কর্ণপাত করেননি। এমনকি উনি দাপ্তরিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে গিয়েছেন এমন কোন অফিসিয়াল নোটিশ আমাদের দেননি। যাকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন তিনিও দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে আজ লিখিত দিয়েছেন। এ অবস্থায় আমরা আজ অভিভাবক শূন্য। এমন নেগ্লেন্সি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক, যার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা এবং সহযোগিতা ছিল। উনি এটার মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষক সকলের দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের দায়িত্বে থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করায় কুয়েটের শিক্ষকরা মনে করেন তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষম। এ কারণে আমরা তার দ্রুত পদত্যাগ দাবি করছি। চলমান সংকটে দীর্ঘায়িত না করতে শিক্ষকরা ভাইস চ্যান্সেলরকে অতি দ্রুত পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখা থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি মাধ্যমে কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন। শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ৯ টায় অনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *