
একেএম নাজমুল আলম : বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ঘরে রান্নার অন্যতম উপাদান আদা। তবে অনেকেই জানেন না যে, আদা শুধু স্বাদে গুণে অনন্য নয়, এটি একটি শক্তিশালী ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। আদা গাছের (Zingiber officinale) মূলভাগটি সাধারণত ব্যবহার হয়ে থাকে, যা শত শত বছর ধরে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আদা গাছের অজানা তথ্য:
* আদা গাছ সাধারণত ২-৩ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়।
* এটি বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালো জন্মে, বিশেষ করে ছায়াযুক্ত ও জলাবদ্ধতা মুক্ত পরিবেশে।
* আদা গাছের পাতা লম্বা ও সরু, দেখতে অনেকটা বাঁশ পাতার মতো।
* এই গাছের শিকড়ই আদা মূল, যেটি খাওয়া হয় ও ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়।
ঔষধি গুণাগুণ:
হজমে সহায়ক: আদা গ্যাস, বমি ভাব, অ্যাসিডিটি কমাতে খুবই কার্যকর।
জ্বর ও সর্দিতে উপকারী: আদার রস বা চা সর্দি-কাশি ও জ্বরে আরাম দেয়।
প্রদাহ নিরাময়: শরীরের যেকোনো ব্যথা, বিশেষ করে বাত বা জয়েন্ট ব্যথায় আদা প্রাকৃতিক প্রদাহ নিবারক হিসেবে কাজ করে।
ইমিউন সিস্টেমে শক্তি: আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে: রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে আদা, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার মানুষ আদা ব্যবহার করে আসছে রান্নার পাশাপাশি নানা ঘরোয়া চিকিৎসায়। কাশি হলে আদা-মধুর মিশ্রণ, ঠান্ডা লাগলে আদা-চা, পেট খারাপে আদার রস—এ সবই আমাদের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসার অংশ।
আদা শুধু রান্নার উপকরণ নয়, এটি একাধারে একটি শক্তিশালী ভেষজ চিকিৎসা উপাদানও। প্রতিদিনের জীবনে এর ব্যবহার বাড়ালে শরীর সুস্থ থাকবে, অনেক ওষুধের প্রয়োজনই হবে না।
চাষযোগ্য গাছ হিসেবেও সম্ভাবনাময়: বাংলাদেশ সরকারের অবদান বর্তমানে বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে।
বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগও আদা চাষে আগ্রহীদের নানা পরামর্শ দিয়ে থাকে।
একটি ছোট গাছ, অসাধারণ গুণ – আদা গাছ আমাদের প্রাকৃতিক ফার্মেসি!