
শাই হোপের ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি রঙিন হলেও শেষ পর্যন্ত তা বিফলে গেছে। কারণ, টিম ডেভিডের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কাছে চাপা পড়ে গেলো হোপের সেই দুর্দান্ত ইনিংস। কাকতালীয়ভাবে, দুই ব্যাটারই সমান রান করে অপরাজিত ছিলেন। তবে সিঙ্গাপুরের সাবেক ক্রিকেটার টিম ডেভিডের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির ওপর ভর করে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছে ২৩ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে সফরকারীরা।
শুক্রবার (স্থানীয় সময়) সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ব্যাটারদের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। শুরুতে হোপ ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের শতক ছাড়ানো ওপেনিং জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায়। কিন্তু এত রান করেও জয়টা ধরা দিল না। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে সবচেয়ে দ্রুত হাফ সেঞ্চুরি এবং সেঞ্চুরি করে ম্যাচের নায়ক বনে যান ডেভিড। তিনি দলকে পৌঁছে দেন ১৬.১ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৫ রানে।
সকালে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উদ্বোধনী জুটিতে হোপ ও কিং ১২৫ রান যোগ করেন। কিং ৩৬ বলে ৩ চার ও ৬ ছয়ের সাহায্যে ৬২ রানে আউট হন।
ওপেনিং জুটি ভাঙার পর বাকি ব্যাটারদের কাছ থেকে সেভাবে সমর্থন না পেলেও একপ্রান্ত ধরে রেখে খেলতে থাকেন হোপ। তিনি ছিলেন আগ্রাসী এবং আত্মবিশ্বাসী। ৫৫ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম শতক স্পর্শ করেন। ইনিংস শেষে হোপ ৫৭ বলে ৮ চার ও ৬ ছয়ের ঝলকে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন।
অধিনায়ক হোপের এমন দুর্দান্ত ইনিংসের পর শুরুটা ভালোই করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা। অস্ট্রেলিয়া পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৬১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে। এরপর ক্রিজে নামেন টিম ডেভিড।
নবম ওভারে ক্যামেরন গ্রিন আউট হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। তখন দলীয় স্কোর ৮৭ রানে ৪ উইকেট। সেখান থেকেই শুরু হয় ডেভিডের তাণ্ডব।
মাত্র ১৬ বলে ৩ চার ও ৬ ছয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করেন ডেভিড। এরপর মিচেল ওয়েনকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন পঞ্চম উইকেটে ১২৮ রানের জুটি, যা অস্ট্রেলিয়ার এই উইকেটে সর্বোচ্চ। এই রেকর্ডের আগের অংশেও ছিলেন ডেভিড, তখন তার সঙ্গী ছিলেন মিচেল মার্শ।
১৭তম ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডেভিড এবং দলকেও পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে তিনি জশ ইংলিসের ৪৩ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ডও ভেঙে দেন। ডেভিডের ইনিংসে ছিল মাত্র ৩৭ বল, ৬টি চার ও ১১টি বিশাল ছয়—ফলে মোট ১০২ রান, এবং সেটিও অপরাজিত থেকে।
মজার ব্যাপার, ২৮২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পর এটি ছিল ডানহাতি ব্যাটার টিম ডেভিডের প্রথম সেঞ্চুরি।
অন্যদিকে, তার সঙ্গী মিচেল ওয়েন ছিলেন বেশ কার্যকর। ১৬ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে ৩৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। এই জুটিতেই মূলত নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পথ।