রিয়াদ আহাম্মেদ,শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদীতে দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখায় খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শ্রীবরদী উপজেলা শাখা। গত ২০ জুন থেকে এই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সাত দিন যাবৎ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জনগণ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরেছেন পরিষদে আগত সেবা গ্রহণকারীরা। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করা হবে বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত মোট ৩ বছরে ৯৩ হাজার ৮শত ৮৬ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পরে ইউনিয়ন পরিষদের। দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার কারণে একাধিক বার মৌখিক সতর্কতা করা হয়। কিন্তু কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় অবশেষে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পল্লী বিদ্যুৎ।
এ ব্যাপারে বীরবান্দা এলাকার বাসিন্দা হুমায়ূন আহমেদ বলেন, জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে তিনদিন যাবৎ ঘোরতেছি কিন্তু ফেরত দিয়ে দিচ্ছে। সচিবের কম্পিউটার বন্ধ তাই কোন কাজ করতে পারছে না। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
মাদারপুর এলাকার বাসিন্দা রহিমদ্দিন বলেন, এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাত্র হত্যার মামলায় আসামি। সে গ্রেফতারের ভয়ে অফিসেই ঠিক মতো আসেনা। অফিসের প্রতি তার কোন গুরুত্ব নাই। মানুষের সেবার প্রতি নেই কোন আগ্রহ। আমি ঢাকা থেকে এসেছি একটি কাজের জন্য। কিন্তু বিদ্যুতের জন্য কাজ হলোনা। দুইদিন বাড়ি থেকে আবার ঢাকায় ফেরত যাচ্ছি।
ভাটি লঙ্গরপাড়া এলাকার খোকন মিয়া জানায়, আমি গত ৪ দিন থেকে তার পিতার মৃত্যু সনদ তোলার জন্য পরিষদে ঘুরতেছি। কিন্তু কারেক্ট না থাকার কারনে সনদ নিতে পারতেছি না। এমন চেয়ারম্যান থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব খাজা মো. বাকি বিল্লাহ বলেন, আসলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারনে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে কয়েকবার অবগতও করেছি।
এ বিষয়ে খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া বলেন, এই বকেয়া খুব তারাতাড়ি পরিশোধ করা হবে। টাকার পরিমাণ বেশি হবার জন্য বকেয়া হয়ে গেছে। আমার আগের চেয়ারম্যানেরও টাকা বকেয়া রেখে গেছেন তাই জমে গেছে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম সূর্য্য নারায়ণ ভৌমিক বলেন, খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎ বিল অনেক বকেয়া হয়ে গেছে। তাদের বার বার অবগতও করা হয়েছে। অন্যান্য অফিসের বকেয়া নিয়মিত পরিশোধ করা হলেও তারা করছিলেন না। তাই তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বকেয়া ও অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।