Wednesday, June 25
Shadow

কাভার্ডভ্যানে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন: লাকসামে কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত


লাকসাম (কুমিল্লা): কুমিল্লার লাকসামে সোমবার (২৩ জুন) রাতে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি বিকল কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এক মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।

নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম মো. জহিরুল ইসলাম (৩৭)। তিনি লালমাই উপজেলার পেরুল (উত্তর) ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশারের ভাতিজা এবং আলীশ্বর গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে।

ওইদিন রাত ১০ টায় লাকসাম পৌরসভার ভৈষকপালিয়া নামকস্থানে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দুর্ঘটনার কারণে ওই সড়কে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সহায়তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি ও নিহতের মরদেহ স্বজনরা নিয়ে যাওয়ার পর লালমাই হাইওয়ে থানাধীন লাকসাম ক্রসিংয়ের পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন।

অপরদিকে দুর্ঘটনার প্রায় একঘন্টা পর সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বিকল কাভার্ডভ্যানটিতে বিক্ষুব্ধ লোকজন আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ওই সড়কে চলাচল করা বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রী সাধারণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।

ঘটনার পরপরই সরেজমিন গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী  সূত্রে জানা গেছে, মোটরসাইকেল আরোহী মো. জহিরুল ইসলাম অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আলীশ্বর থেকে লাকসাম যাচ্ছিলেন।  এ সময় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেলসহ কাভার্ডভ্যানের নিচে ঢুকে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তাঁর দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে গছে।

নিহত মোটরসাইকেল আরোহী মো. জহিরুল ইসলাম’র চাচা লালমাই উপজেলার পেরুল (উত্তর) ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার জানান, তাঁর বড় ভাইয়ের ছেলে জহির। সে কুরিয়া প্রবাসী। বছর খানেক আগে দেশে এসেছে। লাকসাম পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুর গ্রামের মৃত মো. সুরুজ মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করেছে। তার দু’টি সন্তানও রয়েছে। তা ছাড়া, লাকসাম পৌর শহরে একটি বাড়িও আছে।

নিহতের চাচা আবুল বাশার চেয়ারম্যান জানান, ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর ভাতিজা জহির আলীশ্বর গ্রামের বাড়ি থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে লাকসাম পৌর শহরের বাড়ির উদ্দেশ্য যাচ্ছিলো। পথিমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলো!
ঘটনার পরপরই সরেজমিনে গেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, একটি ব্যস্ততম সড়কের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে অন্ধকারে কাভার্ডভ্যানটি দাঁড়িয়ে ছিলো। এতে কাভার্ডভ্যানের পেছনে কোনো ধরণের সাংকেতিক আলো না থাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ফলে বিক্ষুব্ধ লোকজন দাঁড়িয়ে ওই কাভার্ডভ্যানটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মনের ক্ষোভ নিবারণ করেছেন।

এই ব্যাপারে লালমাই হাইওয়ে থানার আওতাধীন লাকসাম ক্রসিংয়ের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নূর মোহাম্মদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে তিনিসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছেন। তবে পুলিশ আসার পূর্বেই দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি ও নিহতের মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন।

তিনি জানান, এ ঘটনায় উর্ধতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *