বিশ্ব পরিবেশ দিবস (৫ জুন) উপলক্ষে সচেতন হই পানি ব্যবহারে
আমরা প্রতিদিন কিছু এমন কাজ করি, যেগুলো অজান্তেই অনেক পানি নষ্ট করছে। এই অপচয় শুধু এখনকার জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও বড় বিপদের কারণ হতে পারে। অথচ সামান্য সচেতন হলেই এসব অভ্যাস বদলে অনেকটা পানি সাশ্রয় করা যায়। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আসুন, জেনে নিই এমন ৭টি সাধারণ অভ্যাস, যেগুলো বদলালেই আমরা পানি বাঁচাতে পারি।
১. বেশি সময় ধরে গোসল করা
অনেকে গরম পানিতে আরাম করে শাওয়ার নিতে পছন্দ করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করলে প্রচুর পানি আর শক্তি অপচয় হয়। ১০ মিনিটের একবার গোসলেই নষ্ট হয় প্রায় ১০০০ ক্যালোরি শক্তি। যদি আমরা ৮ মিনিটের বদলে ৫ মিনিটে গোসল করি আর কম প্রবাহের শাওয়ার ব্যবহার করি, তাহলে পানি ও শক্তি দুটোই প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব।
২. টপটপ করে পানি পড়া কল ঠিক না করা
একটি চুইয়ে পড়া কল বছরে প্রায় ৩,০০০ গ্যালন পানি নষ্ট করতে পারে। অথচ অনেক সময় এই সমস্যাটি ঠিক করতে আধা ঘণ্টারও কম সময় লাগে। একটু যত্ন নিলেই অনেক পানি বাঁচানো সম্ভব।
৩. অল্প কাপড় ধুতে বারবার ওয়াশিং মেশিন চালানো
কয়েকটা কাপড় হলেই অনেকেই ওয়াশিং মেশিন চালিয়ে ফেলেন। এতে করে পানি ও বিদ্যুৎ দুটোই বেশি খরচ হয়। বরং মেশিনটা পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর ইকো-মোড অপশন থাকলে সেটা ব্যবহার করুন, এতে সাশ্রয় আরও বাড়বে।
৪. সবজি ধোয়ার সময় বেশি পানি ব্যবহার করা
সবজি ভিজিয়ে বা ধুতে গিয়ে অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পানি ব্যবহার করেন। এর বদলে একটি বাটিতে কম পানি নিয়ে সবজি ধুলে অপচয় কমে। পরে সেই পানি গাছপালায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. বাগানে অতিরিক্ত পানি দেওয়া
সবুজ বাগান কার না ভালো লাগে! তবে বাগানে বেশি পানি দিলেই তা সুন্দর থাকে—এই ধারণা ঠিক নয়। সকালে বা সন্ধ্যায় পানি দিলে মাটিতে পানি ধরে রাখে বেশি। পাশাপাশি শুষ্কতা সহ্য করতে পারে এমন গাছ লাগালে পানি কম খরচ হয়।
৬. ফিল্টারকৃত কলের পানির বদলে বোতলজাত পানি খাওয়া
অনেকে ভাবেন বোতলজাত পানি বেশি নিরাপদ, কিন্তু বাস্তবে শহরগুলোতে ফিল্টার করা কলের পানি একদমই নিরাপদ। বোতলজাত পানি ব্যবহার করলে শুধু খরচই বাড়ে না, প্লাস্টিক বর্জ্যও তৈরি হয়, যা পরিবেশের ক্ষতি করে।
৭. পুরোনো ধাঁচের কল, শাওয়ার বা টয়লেট ব্যবহার
বাড়িতে পুরোনো পানি ব্যবহারের যন্ত্রপাতি থাকলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে পানি নষ্ট হয়। পানি সাশ্রয়ী আধুনিক ফিটিংস ব্যবহার করলে ২০-৩০% পর্যন্ত পানি বাঁচানো সম্ভব। একবার খরচ করলেই দীর্ঘদিন উপকার মিলবে।
পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবার দায়িত্ব আছে। ছোট ছোট অভ্যাস বদলালেই গড়ে উঠতে পারে এক টেকসই ভবিষ্যৎ। পানি বাঁচাই, ভবিষ্যৎ বাঁচাই।