
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মুতে পাকিস্তান টানা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ১৫টি শহরে হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়ে পাকিস্তান এখন জম্মুতে ধারাবাহিকভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে পরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় জম্মুতে। শহরজুড়ে বেজে ওঠে সাইরেন, ঘোষণা করা হয় ব্ল্যাকআউট। বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল নেটওয়ার্ক।
ডয়চে ভেলে’র একজন সাংবাদিক তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “প্রথমে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে আসতে দেখলাম পাকিস্তানের দিক থেকে। আকাশেই সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। রাতভর চলতে থাকে গোলাগুলি।”
তিনি আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু পৌঁছানোর পরই আকাশে একের পর এক আগুনের গোলা দেখলাম। মুহূর্তের মধ্যেই তা আকাশেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র এভাবেই নিষ্ক্রিয় করলো।”
সাংবাদিকের ভাষায়, “চোখের সামনেই এসব ঘটতে দেখেছি। তখন সাইরেন বাজছে, পুরো শহরে ব্ল্যাকআউট। সমানে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। জম্মুর কাছাকাছি আখনুর সীমান্ত থেকে গুলির শব্দ খুব স্পষ্টভাবে শোনা যাচ্ছিল।”
গোলাগুলি শুরু হতেই সাইরেন বাজতে থাকে। সেই গোলাগুলির শব্দ থামে ভোর সাড়ে চারটার দিকে। এ সময় হোটেলে ফিরে আসেন ওই সাংবাদিক। হোটেলে পৌঁছানোর পর দ্রুত সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব আবাসিকদের নিচে নামিয়ে এনে বলা হয়, যতক্ষণ সাইরেন বাজবে, সবাইকে নিচে থাকতে হবে। পরে সবাইকে বেসমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাইরেন থামার পর জানানো হয়, “ঘরে যাওয়া যাবে, কিন্তু আলো জ্বালানো যাবে না। জানালার পর্দা সরানো যাবে না। আবার সাইরেন বাজলে নিচে আসতে হবে।” পরবর্তীতে যখন আবার সাইরেন বাজে, তখন বলা হয়, “প্রয়োজন হলে নিচে আসতে হবে, কোনো আলো জ্বালানো চলবে না।”
সাংবাদিক বলেন, “ততক্ষণে গুলি ও গোলার আওয়াজ আরও বেড়ে গেছে। ব্ল্যাকআউট, গোলাগুলির নিরন্তর শব্দ, অন্ধকারের মধ্যে ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র—সব মিলিয়ে জম্মুর রাত যেন এক ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্র।”
পরের দিন সকালে তিনি পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হন। রাস্তায় প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর ব্যারিকেড, সেনা টহল এবং থমথমে পরিবেশ লক্ষ্য করেন। তখনো দোকানপাট খোলেনি। রাস্তায় শুধু পুলিশ, সেনা, আধা-সামরিক বাহিনী এবং সাংবাদিকদের স্বল্প উপস্থিতি দেখা যায়।