বুধবার চীন ২০২৫ সালের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য প্রায় ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ১৪তম জাতীয় গণকংগ্রেসের তৃতীয় অধিবেশনের উদ্বোধনী বৈঠকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতির তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি চীনকে অন্যতম দ্রুত বিকাশমান প্রধান অর্থনীতির কাতারে রাখবে। আর বেইজিং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাস্টিন লিন ইয়িফু বলেছেন, চীনের জিডিপি ৫ শতাংশের বেশি হারে বাড়বে এবং বিশ্ব অর্থনীতির মোট প্রবৃদ্ধির ৩০ শতাংশের বেশি অবদান রাখবে এবং এটি শুধু চীনের জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্যই ভালো খবর।
বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৪ শতাংশ
চীনের সরকারি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই বছর বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি।
চীনা অর্থনীতিবিদ থিয়ান ইউন জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো চীন তার বাজেট ঘাটতি ৪ শতাংশ নির্ধারণ করলো। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উচ্চমানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আর্থিক ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার প্রকাশ পেয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে, বিদেশি বাণিজ্য স্থিতিশীল রাখতে এবং নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
২০২৫ সালে ১.৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের দীর্ঘমেয়াদি সরকারি বন্ড ইস্যু করবে চীন, যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ বিলিয়ন ইউয়ান বেশি। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে ৭৩৫ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিগত বছরে চীন সীমান্ত পারাপার বাণিজ্যের নেগেটিভ লিস্ট কার্যকর করেছে, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য টেলিযোগাযোগ ও বায়োটেক সেক্টর খুলে দিয়েছে, এবং সব স্বল্পোন্নত দেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে।
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে বিনিয়োগ
চীন বরাবরের মতো উদ্ভাবন-ভিত্তিক প্রবৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে। সরকার প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা, বিজ্ঞান ও গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং নতুন উদ্ভাবনের পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি শাওমির প্রতিষ্ঠাতা লেই চুন বলেন, উদ্ভাবনী কৌশলই শাওমির সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তিনি জানান, শাওমি টানা ১৮ প্রান্তিকে বিশ্বের শীর্ষ তিন স্মার্টফোন প্রস্তুতকারকের তালিকায় রয়েছে, যা চীনা প্রযুক্তির প্রতি বৈশ্বিক স্বীকৃতির প্রমাণ।
চীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সংস্কার, শিল্প ও একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্ভাবনে বড় ভূমিকা রাখা, এবং যুব বিজ্ঞানীদের জন্য উচ্চমানের প্রতিভা পুল তৈরি করবে বলে জানিয়েছে জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রতিবেদনে।
সূত্র: সিএমজি বাংলা