Saturday, April 19
Shadow

সাংবিধানিক নাম ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ প্রস্তাব ইসলামী আন্দোলনের

পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি ও ভবিষ্যত স্বৈরতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার জন্য সহায়ক প্রস্তাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একমত পোষণ করেছে। একই সঙ্গে দেশের সাংবিধানিক নাম হিসেবে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’- যা বাংলায় ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ প্রস্তাব করেছে দলটি।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে অবস্থিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে এসব প্রস্তাব সম্বলিত সংস্কার প্রস্তাব তুলে দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্মমহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম এবং সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম ও মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরিয়াতুল্লাহ।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো দলটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত সংস্কারের বেশিরভাগের সঙ্গেই একমত পোষণ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিশেষ করে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন; প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা; দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া; একই ব্যক্তি দল, সরকার ও সংসদ প্রধান না থাকা; ৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তির মতো প্রস্তাব- যা ভবিষ্যতে স্বৈরতন্ত্র মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে, সেগুলোকে ঐকমত্য পোষণ করেছে।

রাষ্ট্রের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের সঙ্গেও ইসলামী আন্দোলন একমত, তবে রাষ্ট্রের নাম হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’। যা বাংলায় ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’। কারণ এই নামের মধ্যেই জনকল্যাণ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

এছাড়া বিচার বিভাগীয় ২৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ২১টির সঙ্গেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে একমত পোষণ করেছে। এর বাইরে শরীয়াহ কোর্ট স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং প্রমাণিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করার ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সম্মতিকে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে জনপ্রশাসন বিষয়ে প্রস্তাবিত মোট ২৬টি সংস্কারের মধ্যে ১২টি একমত পোষণ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ৯টি প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। আর ৫টির সঙ্গে আংশিক একমত পোষণ করা হয়েছে। এরমধ্যে বিশেষ করে প্রদেশিক ও সিটি গভর্নমেন্ট প্রস্তাবের সঙ্গে এবং মেম্বারদের ভোটে চেয়ারম্যান নিয়োগের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট সংশোধনের বদলে এটি পুরো বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগে মন্ত্রীপরিষদ কমিটিরও বিরোধিতা করা হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদশ বলেছে, সংবিধান সংস্কার কমিশনের ৭০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৬১টি প্রস্তাবে একমত, ৩টি একমত পোষণ করা হয় নাই। ৬টিতে আংশিক একমত পোষণ করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব এবং মন্তব্য যুক্ত করা হয়েছে ১১টি ও মৌলিক প্রস্তাব ৪টি।

বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ২৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ২১টি প্রস্তাবে একমত, ২টিতে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১২টি প্রস্তাবে একমত, ৯টিতে একমত পোষণ করা হয় নাই। একটি বিশেষ মূল্যায়নসহ ১৩টি নতুন প্রস্তাবনা যুক্ত করা হয়েছে।

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের ২৭টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৮টি প্রস্তাবে একমত, ৯টিতে একমত পোষণ করা হয় নাই। নতুন প্রস্তাবনা যুক্ত করা হয়েছে একটি।

দুদক সংস্কার কমিশনের ২১টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৮টি প্রস্তাবে একমত, ৩টিতে একমত পোষণ করা হয় নাই। নতুন প্রস্তাবনা ৫টি ও সুপারিশ যুক্ত করা হয়েছে ৩টি।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৫টি প্রস্তাবের সবগুলোতেই একমত পোষণ করা হয়েছে।

মোট ১৮২টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৪৫টি প্রস্তাবে একমত, ২৬টিতে দ্বিমত, ৪১টি নতুন প্রস্তাব ও ৪টি মৌলিক প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *