শান্তি-সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ গড়তে ১১ দফা ঘোষণা
সাইফ উল্লাহ, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ সদর পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ পিএফজির উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দি হাঙ্গার প্রজেক্টে’র এমআইপিএস প্রকল্পের সহযোগিতায় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজনের অংশগ্রহণে শান্তি-সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ গড়তে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপে ১১দফা ঘোষণা করা হয়। সুনামগঞ্জ সদর পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) এর এ্যাম্বাসেডর মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ মহবিুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে ও পিএফজি সমন্বয়কারী জেলা সুজনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম সাঈদ এর সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জের অতিরিকআত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সুনজিত কুমার চন্দ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর পরিচালনা পরিষদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ পিএডিএন এর প্রধান উপদেষ্টা নুরুল হক আফিন্দী, সুনামগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন এর ধর্মগুরু স্বামী হৃদয়ানন্দ মহারাজ, ইমাম মোয়াজ্জিন পরিষদ এর সভাপতি মাওলানা আবু সাঈদ, সুনামগঞ্জ প্রেসবিটারিয়ান এর সাধারণ সম্পাদক ডেনিস চত্রবর্তী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এর সহ সভাপতি বিটু বড়ুয়, কন্যা-শিশু এডভোকেসি ফোরাম এর সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি শাহীনা চৌধুরী রুবি, সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাফেজা ফেরদৌসী লিপন, উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো: জহির হোসেন, ব্র্যাক এর জেলা সমন্বয়ক একে আজাদ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ লোকমান আহমদ, গীতা পাঠ করেন অমিত চক্রবর্তী, বাইবেল পাঠ করেন ডেনিস চক্রবর্তী, ত্রিপঠক পাঠ করেন বিটু রড়ুয়া। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের এরিয়া কো-অর্ডিনেটর নাজমুল হুদা মিনা, স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএফজি সদস্য হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুখেন্দু সেন, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর কুদরত পাশা। উক্ত সংলাপে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ সংস্কৃতি কলেজ এর অধ্যক্ষ গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পিস এ্যাম্বাসেডর মাহবুবুল হাছান শাহীন, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পলাশ, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক আবুল হোসেন, তৃতীয় লিঙ্গের প্রিয়াংকা, সংবাদ কর্মী আমিনুল হক, সামছুল কাদির মিসবাহ, কর্ণবাবু দাস, মাওলানা নূর হোসাইন, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ, মাওলানা ফয়জুন নুর, মাওলানা আরশদনোমান, মাওলানা তাজুল ইসলাম, পুরোহিত কৃষ্ণ গোপাল গোস্বামী, নারায়ন চক্রবর্তী, গৌরী শঙ্কর ভট্টাচার্য্য, অমোখ গোস্বামী সমাজ সেবা কার্যালয়ের আলমগীর, নুরুল হাসান আতাহের, ইয়থ পিস এম্বাসেডর গ্রুপের আলী ইমরান, তুর্য দাস, ঝর্ণা আক্তার প্রমূখ। প্রধান অতিথির , সুনামগঞ্জের অতিরিকআত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে আমার তাকার কথা ছিল না মাননীয় উপদেষ্টা সুনামগঞ্জে আসায় জেলা প্রশাসক স্যার সেখানে আছেন আমি উনার প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। এসে নিজকে ভাগ্যবান মনে করছি কারণ ভাল এবং ব্যাতিক্রমধর্মী একটি অনুষ্ঠানে এসেছি। আমি আশা করি আপনাদের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় শান্তি-সম্প্রীতি বজায় থাকবে। তিনি আহ্বান জানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে, সেখানে কোন ধরণের গোজব ছড়ানো হলে না জেনে সহমত প্রকাশ করা যাবে না। যাচাই বাচাই করতে হবে। তিনি কার্যক্রমের সুফল কামনা করে এমন একটি ভাল উদ্যোগের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সভায় দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এবং পিএফজি কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা ও এযাবৎকালে পরিচালিত কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন। ধর্মীয়, জাতিগত এবং রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতা পরিহার করে একটি শন্তি ও সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ গড়তে সকলের দায়িত্বশীল ভুমিকা কামনা করেন। ধর্মীয় নেতারা বলেন, নিজ নিজ ধর্মীয় বিধান থেকে সম্প্রীতি’র বাণী সকলের কাছে পৌছে দিতে হবে। ধর্মের নামে অধর্ম করা যাবে না। যারা ধর্মীয় অনুসাসন মেনে চলে তারা সংঘাস সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে না। অংশগ্রহণকারীগণ শান্তি সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় করণীয় বিষয়ে নিজদের মতামত তুলে ধরেন। এসময় শান্তি-সম্প্র্রীতির সুনামগঞ্জ গড়তে ১১ দফা সম্বলিত ঘোষণাপত্র পাঠ ও সংহিতি প্রকাশ এবং স্বাক্ষর করেন উপস্থিত সকলে।