বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তবে কম বয়সীদের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি কম নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যেও স্ট্রোকের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ট্রোক মূলত মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে ঘটে। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। এখানে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী স্ট্রোক প্রতিরোধে ৭টি কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো।
১. ধূমপান ছেড়ে দিন
ধূমপান স্ট্রোকের অন্যতম বড় ঝুঁকি। ধূমপান রক্তনালির ভেতরের অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তকে ঘন করে তোলে। ফলে সহজেই রক্ত জমাট বাঁধে এবং তা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে ধূমপান ছাড়তে হবে।
২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
উচ্চ রক্তচাপ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা স্ট্রোকের প্রধান কারণ। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন পরিবর্তন জরুরি।
৩. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন
উচ্চ কোলেস্টেরল রক্তনালিতে চর্বি জমিয়ে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমিয়ে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
৪. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ডায়াবেটিস থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য এবং শারীরিক সক্রিয়তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্যগ্রহণ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
৬. পর্যাপ্ত ঘুম
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। কম বা বেশি ঘুম উভয়ই রক্তচাপ বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুম স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।
৭. শারীরিক সক্রিয়তা বজায় রাখুন
সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম বা ৭৫ মিনিট তীব্র ব্যায়াম করা উচিত। এটি হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়।
শেষ কথা
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ধূমপান পরিহার, নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম এই পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম। এসব অভ্যাস আপনাকে শুধু স্ট্রোক থেকে রক্ষা করবে না, সামগ্রিকভাবে একটি সুস্থ জীবন নিশ্চিত করবে।