শীতকালীন পর্যটনকে স্বাগত জানাতে চেষ্টার কমতি নেই চীন সরকারের। আর এর অর্থনৈতিক সুফল এখন পাওয়া যাচ্ছে চীনের সবখানেই। ব্যতিক্রম নয় চীনের উত্তর-পূর্ব হেইলংচিয়াং প্রদেশের সবচেয়ে উত্তরের শহর মোহ্য। এখানে এখন শীত মৌসুমে পর্যটকদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। বরফ ও তুষারে ঢাকা মোহের গ্রামগুলোর অর্থনীতি এখন পর্যটকদের আনাগোনায় বেশ জমজমাট।
বেইচি গ্রামের বাসিন্দা শি রুইচুয়ান বলেন, ‘আমরা পর্যটকদের জন্য চা বিরতি এলাকা, পাঠাগার ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক পণ্য কেনাকাটার সুবিধাসহ বিভিন্ন পাবলিক স্পেস স্থাপন করেছি। এখন আমাদের অনেকে ব্যবসা পরিচালনা করছে। উন্নয়ন নীতিগুলোও ভালো হচ্ছে।’
চীনা সরকার শীতকালীন পর্যটনকে সমর্থনকারী নীতি বাস্তবায়ন করেছে, যা স্থানীয় স্কিইং, স্কেটিং, বরফ ফটোগ্রাফি ও শিক্ষামূলক ভ্রমণে জড়িত ব্যবসায়ীদের বৈচিত্র্যময় সেবা প্রদানে উৎসাহ যোগাচ্ছে।
চীন সরকার সম্প্রতি ৩০ হাজার বিশেষ ভাউচার ইস্যু করেছে যা স্কেটিং ও স্কিইংয়ের মতো শীতকালীন কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এবারের বসন্ত উৎসবে তুষার ও বরফ সংগীত উৎসবের মতো বিশেষ ইভেন্টেরও আয়োজন করা হয়েছে শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোয়।
উত্তর-পশ্চিমের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের আলতাই এলাকাটিও দীর্ঘ শীতকালীন মৌসুমের জন্য পরিচিত। এখন এখানেও পর্যটকদের জন্য স্কিইং এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার জন্য বিশেষ কার্যক্রম চলছে।
পর্যটক চাং মিং বলেন, ‘আমি পশমের স্কি তৈরির ইতিহাস, উৎপাদন প্রক্রিয়া ও কারিগরি দক্ষতা সম্পর্কে জেনেছি। এ ছাড়া, এই প্রাচীন দক্ষতা সংরক্ষণের জন্য পশম স্কিকে অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যা সত্যিই বিস্ময়কর।’
চিলিন প্রদেশেও এখন প্রচুর শীতকালীন ক্রীড়া গন্তব্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ৭৫টি স্কি রিসোর্ট তাদের সেবার উন্নত করেছে। এর মধ্যে বেইতাহু স্কি রিসোর্ট তার স্কি করার অঞ্চল ১৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। স্কি রান সংখ্যা ৬৪ থেকে ৭৪-এ উন্নীত করেছে। এই মৌসুমে, রিসোর্টটি ১০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থীকে স্বাগত জানাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শাংহাই ও হুবেইতে ইনডোর ও আউটডোর শীতকালীন ক্রীড়া সুবিধাগুলোর প্রতি লোকজনের ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। হুবেই প্রদেশে স্কি হোটেল বুকিং এ বছরের দুই মাসে ৮৩ শতাংশ বেড়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের একটি আধুনিক শীতকালীন ক্রীড়া ও পর্যটন শিল্প প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছে চীন।
সূত্র: সিএমজি বাংলা