চীনের ছাং’এ-৬ মহাকাশ অভিযানে সংগৃহীত চাঁদের পাথরের নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চাঁদের অপর প্রান্তের ভূ-অভ্যন্তরের ম্যান্টল স্তরে পানির পরিমাণ দৃশ্যমান পাশের তুলনায় কম। নেচার জার্নালে বুধবার প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, চাঁদের এই লুকানো অংশে প্রতি গ্রাম পাথরে পানির পরিমাণ ২ মাইক্রোগ্রামেরও কম, যা এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন রেকর্ড।

গবেষক হু সেন বলেন, ছাং’এ-৬ এ সংগৃহীত বাসল্টিক মান্টলের পানির পরিমাণ প্রতি গ্রামে ২ মাইক্রোগ্রামের নিচে যেখানে দৃশ্যমান পাশে এটি প্রায় ৭.৫ মাইক্রোগ্রাম। আগে সংগৃহীত চাঁদের সামনে দিকের নমুনায় এ পরিমাণ ছিল ২০০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু-আইটকেন বেসিনে অবতরণ করে ছাং’এ-৬ মিশন প্রায় ১,৯৩৫ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৫ গ্রাম নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়।
ভবিষ্যতের ছাং’এ-৭ মিশন চাঁদের উপরিভাগে পানির উপস্থিতি নিয়ে গবেষণায় মনোযোগ দেবে চীন।
বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে মঙ্গল গ্রহের সমান একটি বস্তুর পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং সেখান থেকেই চাঁদের সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড তাপমাত্রার সংঘর্ষের সময় চাঁদের ভেতরের পানি ও অন্যান্য উদ্বায়ী উপাদান নিঃশেষ হয়ে যায় বলে ধারণা করা হয়।
গত দুই দশক ধরে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক চলেছে যে, চাঁদের ভূ-ভাগ ও কেন্দ্রের মাঝখানের স্তর—মেন্টল-এ পানির উপস্থিতি বেশি না কম এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় পূর্ববর্তী গবেষণা চাঁদের দৃশ্যমান পাশের নমুনার ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছিল।
২০২৪ সালের মে মাসের শুরুতে উৎক্ষেপণ করা চীনের ছাং’এ-৬ মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে এবং জুনের শেষ দিকে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এটি চাঁদের দূর প্রান্ত থেকে প্রথমবারের মতো ১,৯৩৫ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করে আনে।
সূত্র: সিএমজি বাংলা