শাহ্ রিয়ার, জবি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগে ‘ফিলোসোফি কালচারাল ক্লাব’ কর্তৃক আয়োজিত ‘ফিলো কার্নিভাল ১.০’ অনুষ্ঠিত হলো বিপুল উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে। চার দিনব্যাপী এই সাংস্কৃতিক আয়োজন শেষ হয় আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম পিএইচডি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রইস উদ্দীন, ক্লাবের মডারেটর সহযোগী অধ্যাপক জসীম খান, ক্লাবটির সভাপতি সাফা আক্তার নোলক, সাধারণ সম্পাদক রাত্রি বিশ্বাসসহ বিভাগের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ ।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় এবং জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
‘ফিলোসোফি কালচারাল ক্লাব’-এর সভাপতি সাফা আক্তার নোলক বলেন, “ফিলো কার্নিভাল ১.০ কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি দর্শনের সৌন্দর্য ও শিল্পকে সংস্কৃতির মাধ্যমে ছুয়ে দেখার এক ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।”
ক্লাবের মডারেটর সহযোগী অধ্যাপক জসীম খান বলেন, “কেবল সংস্কৃতির মাধ্যমেই মানুষের অন্তরে পৌঁছানো যায় এবং সেদিকেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি।” তিনি ক্লাবের সকল সদস্যের নিরলস পরিশ্রমের প্রশংসা করেন এবং বিভাগের এমন আয়োজনে উপাচার্যের উপস্থিতিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রইস উদ্দীন বলেন, “দর্শন কেবল একটি একাডেমিক বিষয় নয়; এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুপুঙ্খভাবে উপস্থিত। গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় উপাচার্য মহোদয়ের ভুমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি।”
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম পিএইচডি বলেন, “‘Philosophy is the mother of all sciences’—এই কথাটি আমাদের সকলেরই জানা। দর্শনের ক্ষুদ্র শাখা লজিক ও এথিকস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” তিনি দর্শন বিভাগের এ ধরনের সৃজনশীল উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ‘ফিলোসোফি কালচারাল ক্লাব’-এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মালা তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “ ফিলো কার্নিভাল ১.০ ছিলো দর্শনের রঙে রাঙানো এক বর্ণিল সংস্কৃতি উৎসব! প্রতিটি মুহূর্ত ছিলো ভাবনার ছোঁয়া ও চেতনার জাগরণে ভরপুর। এই অভিজ্ঞতা আমাকে শুধু আনন্দ দেয়নি, দিয়েছে গভীর অনুপ্রেরণা।”
এভাবেই দর্শনের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ‘ফিলো কার্নিভাল ১.০’ হয়ে উঠলো এক অনন্য সাংস্কৃতিক মিলনমেলা, যা দর্শন বিভাগের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠান শেষে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়সহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। পুরো আয়োজন ছিলো আচরণবিধি মেনে অত্যন্ত পরিপাটি ও মনোমুগ্ধকর।