জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা— সম্প্রতি এমন একটি ফোনালাপের অডিও প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি। তারা দাবি করেছে, অডিওটি যাচাই-বাছাই করে তারা নিশ্চিত হয়েছে এটি আসল এবং এতে কোনো ধরনের সম্পাদনা বা বিকৃতি নেই।
এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর (প্রধান কৌঁসুলি) তাজুল ইসলাম। বুধবার (৯ জুলাই) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ফোনালাপটি উদ্ধার করেছে বিবিসি নয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা।
ফেসবুক পোস্টে আইনজীবী তাজুল ইসলাম লেখেন, “মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। নিজের চোখেই দেখে নিন। তবে এই কল রেকর্ডটি বিবিসি উদ্ধার করেনি— করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা। এটা ট্রেলার মাত্র। অনেক কিছু এখনো বাকি। অপেক্ষায় থাকুন।”
এদিকে, বিবিসি জানিয়েছে— শেখ হাসিনার কথিত এই কল রেকর্ডটি বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কর্তৃক রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে এটি কার মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নয়।
ফাঁস হওয়া অডিওর সত্যতা যাচাই করতে বিবিসি এটি পাঠায় ব্রিটেনভিত্তিক অডিও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট-এর কাছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, রেকর্ডিংটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়নি, এবং এতে কোনো ধরনের সম্পাদনা বা বিকৃতির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ইয়ারশট আরও জানায়, রেকর্ডিংয়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ENF) শনাক্ত করা গেছে— যা একটি নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তিগত পদ্ধতি, যেটির মাধ্যমে প্রমাণ হয় অডিওটি আসল এবং এটি ঘটনার সময়ের সঙ্গেই মিলে যায়। ফলে এর যথার্থতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ কম।
এমনকি এই কল রেকর্ডটি আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করার প্রস্তুতিও চলছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কেউ এর সত্যতা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি, তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।