পাইকগাছা- কয়রা প্রধান সড়কে বেহাল দশা : জনদুর্ভোগ চরমে
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছাঃ কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতে পাইকগাছা-কয়রা প্রধান সড়কের বেহাল দশা। জনদুর্ভোগ চরমে।
পাইকগাছা আঠার মাইল সড়কের কাশিমনগর হতে পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বৃষ্টিতে রাস্তা ভেঙে খানা-খন্দ ও ডোবায় পরিণত হয়েছে। এমন বেহাল দশায় যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। খানাখন্দে ভরা সড়কে বৃষ্টি হলে জমছে হাঁটু পানি। এক কথায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে সড়ক। কপিলমুনি কয়েকটি স্থানে সহ গোলাবাড়ি মোড়ের সড়কটি খালে পরিণত হয়েছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সতর্ক করতে লাল পতাকা দেওয়া হয়েছে। যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
মুচির মোড় থেকে মাহমুদকাটি কমিউনিটি ক্লিনিক মোড় পর্যন্ত সড়কের ভয়াবহ অবস্থা। এছাড়া সড়কের পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট, মানিক তলা, নতুন বাজার, হাবিবনগর, আগড়ঘাটা, গোলাবাড়ি ও কপিলমুনি বাজার মোড় সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট, মুচির মোড় ও গোলাবাড়ি মোড়ের সড়কে বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে তলিয়ে যায়। পুরো সড়কে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কারণে বৃষ্টির পানি, ড্রেনেজের ময়লা পানি সড়কে এসে জমা হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত পথচারী ও এলাকাবাসী। উপকূলবর্তী এ অঞ্চলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে প্রতিদিন ঢাকাগামী পরিবহন, বাস-ট্রাক, পিকআপ, ছোট যানবাহন সহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে কয়রা সহ পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলার তালা, আশাশুনির লক্ষাধিক মানুষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখে মাছ ও কাঁকড়া পরিবহন গুলো চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় তাদের মালামাল বহনের জন্য ব্যবহার হয় মালবাহী বড় বড় ট্রাক। বেশি বিপাকে পড়েছে ইজিবাইক, মহেন্দ্র, নছিমন করিমন, মটরসাইকেল, ভ্যান চালিত যান ও পথচারীরা।
উপজেলার কপিলমুনি বাজারের উত্তরে কাশিমনগর, দক্ষিণে মাহমুদকাটী তিন রাস্তার মোড়সহ প্রায় জায়গায় রাস্তাটির করুণ পরিণতি দেখা গেছে। বলতে গেলে
দক্ষিণ জনপদের মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাতয়াত ও বিভিন্ন প্রকার পণ্য আনা-নেওয়া করে।
জানা গেছে, পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট হতে কপিলমুনি বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি। সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার ইট, খোয়া, পাথর, উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কার্পেটিং উঠে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে পড়েছে। রাস্তার গর্তের মাটি, ইট সরে খালে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় গর্তে পড়ে যানবাহনের এস্কেল ও পাতি ভেঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া ভাঙা -চুড়া সড়কে যানবাহন চলাচলের কোন শৃংখলা নেই। যে যেভাবে পারছে সে সেভাবেই চলছে। ছোট যানবাহন ও অটোরিকশা উল্টে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটেছে দুর্ঘটনা। এদিকে পাইকগাছা-কয়রা সড়কের উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কাঁটাখালী বাজার থেকে চাঁদখালী বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬কি. মি. মধ্যে ৩ কি. মি. সড়কের পিচ, পাথর, ইট, খোয়া উঠে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে চরম জনদুর্ভোগ পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। বৃষ্টিতে সড়কে সৃষ্ট বড় গর্ত আর খানাখন্দে ময়লাযুক্ত পানি জমছে। নোংরা পানিতে স্কুল গামী শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের জামা-কাপড় নোংরা তো হচ্ছেই পাশাপাশি মোটরসাইকেল, ভ্যান, টলি সহ যানবাহনে লেগেই আছে দুর্ঘটনা। আর এখন বর্ষার মৌসুম হওয়ায় সড়কের বেহাল অবস্থা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। নেই যাতায়াতের বিকল্প কোনো রাস্তা। বাধ্য হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে হাজারো মানুষ ও যানবাহন। চালক, যাত্রী সাধারণ ও এলাকাবাসি উপকূলী এ জনপদের জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে খুলনা জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।