Site icon আজকের কাগজ

ভারী বর্ষণে পাইকগাছা পৌরসদর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত; ফসল ও মৎস্যঘেরে ক্ষতি:  বেড়েছে জনদুর্ভোগ

পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছাঃ ভারী বর্ষণে উপকূলবর্তী পাইকগাছার পৌরসভা সহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষেত, মৎস্য ঘের, পুকুর, জলাশয় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেড়েছে জনদুর্ভোগ। উপজেলার পাইকগাছা সরকারি কলেজ, উপজেলা পরিষদ চত্বর, কৃষি অফিস ও আদালত চত্ত্বর সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে দুই বার একটানা ভারী বর্ষণের পর গতকাল মুষলধারায় বৃষ্টিতে পাইকগাছার বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক স্থানে বড় বড় গাছ পড়ে গেছে।

বছর বর্ষকালের শুরু আষাঢ় মাসের প্রথম দিন থেকে একটানা গুড়ি গুড়ি, হালকা ও ভারি বৃষ্টি লেগে আছে। এতে আমন ধানের বীজ তলা, সবজি ক্ষেত, মৎস্য লীজ ঘের, নার্সারী, পুকুর, বাগান, রাস্তা ও বসতবাড়ী তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাইকগাছার রাড়ুলী,

গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী উঁচু এলাকা হলেও বাকী ৬টি ইউনিয়ন নিচু এলাকায় অবস্থিত। সামান্য বৃষ্টি হলে এ সকল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে গত দিনের ভারী বর্ষণে উঁচু এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর বাজারের সোনা পট্টি, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীন রাস্তাগুলি পানিতে তলিয়ে থাকে। বাড়ির উঠানে পানিতে তলিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ বিড়াম্বনায় পড়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষরা কাজ যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়ে আর্থিক অনাটনের মধ্যে পড়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়ন গদাইপুরের কয়েক’শ নার্সারী ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবজি ক্ষেত ও আমন ধান ঝড়ো হাওয়ায় পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনের একটানা বৃস্টিতে মানুষের জনদূর্ভোগ বেড়েই চলেছে। গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক সামাদ গাজী জানান, ভারী বৃষ্টিতে নার্সারী, সবজি ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তার কুল, পেয়ারা ও লেবুর প্রায় তিন হাজার ছোট চারা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বাড়ির উঠান পর্যন্ত তালিয়ে রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকাবাসির একই অভিযোগ, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ানের পানি নিঃস্কাশনের ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া ব্যক্তি স্বার্থে কিছু মানুষ তার বাড়ির সামনের বা পাশের ড্রেনটি বন্ধ করে রাখায় বিভিন্ন এলাকাপানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানি ঠিক মত বের হতে পারছে না। এতে করে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। পাইকগাছা মেইন সড়কের ঘোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পযেন্ট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তা আরো ভেঙ্গে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সোনাদানা ইউনিয়ন লীজঘের এলাকা পানিতে ডুবে একাকার। চাঁদখালী ও লস্কর ইউনিয়নেও বদ্ধ নদীতে নেটপাটা, ছোট ছোট ঘের থাকায় ব্যাপক এলাকায় জলমগ্ন। গড়ইখালী ইউনিয়নে বীজতলা সহ সবজির ক্ষেত প্লাবিত হয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে সর্ব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাটির রাস্তা। পানির তোড়ে অনেক স্থানে ইটের সলিং উঠে গেছে। মাটির ঘরবাড়ি গুলো হয়েছে নড়বড়ে। এ ব্যাপারে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হয়ে আমন ধানের বীজ তলা তলিয়ে গেছে ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপ সহকারী কর্মকর্তারা ইউনিয়ানে কাজ করছেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই প্লাবিত এলাকা পানি সরে গেলে আমন ধানের চারার তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নিঃস্কাশনের জন্য নদীর স্লুইস গেটগুলি উন্মুক্ত রাখা, নেটপাটা অপসারণ সহ বিভিন্ন পানি নিঃস্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ টিমগুলিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Exit mobile version