বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
১৩১ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায় সম্প্রতি প্রকাশ করা হলেও শনিবার এ তথ্য গণমাধ্যমে জানা যায়। গত ১৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা, ভিকটিম আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ ও বাবা বরকত উল্লাহ।
আবরারের ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, “রায় বহাল রয়েছে, আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি দ্রুত কার্যকর করা হবে।”
তার বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “এই রায় যেন অতিদ্রুত কার্যকর হয়, সেই দাবি জানাই।”
একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জেল থেকে পলায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটা ছয় মাস পর জানলাম। এটা আমাদের নয়, জেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন।”
২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি এ মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। কারাবন্দি আসামিরা জেল আপিল এবং ফৌজদারি আপিল করেন।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার অপু, মেহেদী হাসান রবিন শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান মাজেদ, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম তানভির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মিজানুর রহমান মিজান, মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদউজ্জামান মণ্ডল জিসান ও মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পানি চুক্তি ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত প্রকাশ করায় বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় আবরারকে। পরদিন আবরারের বাবা চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।
মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।