Wednesday, November 20

কিশোরগঞ্জে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে নিহত শাহিন মিয়ার (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার ঝুমুরকে (৩০) আটক করা হয়েছে। 

নিহত শাহিন মিয়া উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাইকশা গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কটিয়াদী পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়া মহল্লার ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহিন তিন কন্যাসন্তানের জনক। এক বছর আগে কটিয়াদী পশ্চিমপাড়া মহল্লার আবুল হোসেনের মেয়ে দুই সন্তানের জননী ঝর্ণা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর পশ্চিমপাড়া মহল্লায় থাকতেন তারা। দুজনে স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী সুলতানা রাজিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। প্রথম স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতেন। সন্তানদের দেখতে মাঝেমধ্যে প্রথম স্ত্রীর বাসায় যেতেন। বুধবার সন্ধ্যায় সন্তানদের দেখতে প্রথম স্ত্রীর বাসায় যান। রাতে নিজের বাসায় ফিরলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারের সঙ্গে শাহিনের ঝগড়া হয়। 

অভিযোগ উঠেছে, ঝগড়া ও বিরোধের জের ধরে রাতে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে গভীর রাতে শাহিনকে হত্যা করেন দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা। 

তাদের ভাড়া বাসার মালিক শাহ আলম জানান, ভোরে পাঁচতলায় শাহিনকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পাশে তার স্ত্রীও বসা ছিলেন। পরে শাহিনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
 
দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার দাবি করেছেন, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে প্রথম স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া ও শাহিনের বাবা-মা এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে জানিয়েছেন। 

শাহিনের বাবা মো. তৈয়ব উদ্দিন বলেন, ‌তিন সন্তান রেখে আমার ছেলে আবার বিয়ে করায় আমাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। তবে ছেলে প্রায়ই তার মায়ের কাছে অভিযোগ করতো, ঝর্ণা তার বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছেলেকে নির্যাতন করছে। এ কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। গত কিছুদিন আগে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করেছিল শাহিন। কিন্তু ঝর্ণা বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি। এ নিয়ে ঝগড়া লেগে থাকতো। 

কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, সকালে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় বেশ কিছুক্ষণ আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.তরিকুল ইসলাম বলেন, ‌‘শাহীনের লাশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার গলায় নিচে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version