Monday, January 13
Shadow

স্বর্ণ কেনার আগে জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো

বিয়ে, উপহার, বিনিয়োগ অথবা সঞ্চয়ের জন্য স্বর্ণ দীর্ঘদিন ধরে মানুষের আস্থার প্রতীক। সম্প্রতি  স্বর্ণের বৈশ্বিক দাম ওঠানামা করলেও দেশে এর প্রতি চাহিদা বেড়েছে। চলতি বছর স্বর্ণের দাম গড়ে ২৭ শতাংশ ও গত ৫ বছরে প্রায় ১৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, স্বর্ণ কেনাবেচার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক জেনে নেয়া প্রয়োজন। 

স্বর্ণে বিনিয়োগের খরচ ও লাভের হিসাব 
ধরুন, আপনি ২২ ক্যারেটের একটি সোনার বার ১ লাখ টাকা দিয়ে কিনলেন। বাংলাদেশে স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। পাঁচ বছর পর ১৪৫ শতাংশ হার ধরে এই স্বর্ণের দাম হবে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তবে, স্বর্ণ বিক্রি করতে চাইলে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নির্ধারিত ১৭ শতাংশ চার্জ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ আপনার লাভ হচ্ছে ৯৮ হাজার ৩৫০ টাকা।  

স্বর্ণের মান ও বিশুদ্ধতা
স্বর্ণ কেনাবেচার ক্ষেত্রে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ক্যারেটের ওপর ভিত্তি করে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে স্বর্ণ নরম ও ভঙ্গুর ধাতু; এটিকে শক্ত করতে খাদ (নিকেল-ক্যাডমিয়াম) মেশানো হয়। এই খাদ ও বিশুদ্ধতার ওপর নির্ভর করে স্বর্ণকে ১৮, ২১, ২২ বা ২৪ ক্যারেটে ভাগ করা হয়। 
তবে স্বর্ণে বিনিয়োগ করে লাভ করতে চাইলে খেয়াল রাখতে হবে যে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অলঙ্কারের চাইতে গোল্ড বার বা কয়েন বেশি লাভজনক। অলঙ্কারের সাথে জড়িত থাকে অনেক আবেগ, অনুরাগ ও স্মৃতি। তবে বাহারি কারুকাজ ও পাথর ব্যবহারের জন্য অলঙ্কারে স্বর্ণের পরিমাণ নিয়ে সংশয় থাকতে পারে। এক্ষেত্রে, গোল্ড বার বা কয়েনে আপনি নির্দিষ্ট ওজনের স্বর্ণই পাচ্ছেন, যা ভবিষ্যতের সঞ্চয় বা অলঙ্কারের উৎস হতে পারে। এছাড়া, স্বর্ণ কেনাবেচার সময় অবশ্যই হলমার্ক দেখে কেনা উচিত। ‘বাংলা গোল্ড’ ও ‘ঢাকা গোল্ড’-এর মতো, বাংলাদেশের স্বনামধন্য কিছু গোল্ড টেস্টিং ল্যাব রয়েছে, যারা স্বর্ণের গুণগত মান যাচাই করার পর লেজার মেশিন দিয়ে স্বর্ণের গায়ে হলমার্ক খোদাই করে থাকে।

প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বর্ণে বিনিয়োগের নতুন পথ
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে স্বর্ণ কেনাবেচা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। বিশ্বের বহু উন্নত দেশের মতো, বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো স্বর্ণ কেনাবেচার সুযোগ নিয়ে এসেছে, ‘গোল্ড কিনেন’ অ্যাপ । এতে মাত্র ৫০০ টাকায় খুব সহজেই গোল্ড কিনে সঞ্চয় করার সুযোগ রয়েছে; আবার, প্রয়োজনে যেকোনো সময় তা বিক্রি করারও সুবিধা রয়েছে। এছাড়া ১ গ্রাম থেকে শুরু করে সঞ্চিত স্বর্ণ, গোল্ড বার বা কয়েন আকারে নিজের কাছে এনে রাখার সুযোগও রয়েছে। এসব সুবিধা সবার জন্য স্বর্ণে সঞ্চয় ও বিনিয়োগকে আরও সহজলভ্য করে তুলছে।

স্বর্ণে বিনিয়োগ লাভজনক হলেও এর খরচ ও কেনাবেচার সঠিক মাধ্যম সম্পর্কে শুরুতেই জেনে নেয়া প্রয়োজন। স্বর্ণ বিনিয়োগ একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প; তবে বিশুদ্ধতা, বাজারদর ও আধুনিক প্ল্যাটফর্মের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আপনি নিরাপদ ও কার্যকর উপায়ে স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *