
বি এম মিজানুর রহমান
বন্দে মায়া লাগাইছে, প্রীতি শিখাইছে
দিওয়ানা বানাইছে…
মোবাইলে গান শুনতে শুনতে রবি নের রোজ-এর কথা খুব মনে পড়ছে।হেড ফোন কানে স্মার্ট সিল্কি চুলের রবিনকে চাঁদনী রাতে গ্রামের মেঠো পথে অদ্ভুত লাগছিলো। টর্চ হাতে ট্রাউজার আর গেঞ্জি গায়ে বাদাম বিক্রেতার বেশে তাকে একদম বেমানান। শহুরে গন্ধ কি এতো সহজে শরীর থেকে চলে যায়।যদিও রবিন গ্রামে অভিযোজিত হওয়ার শতভাগ চেষ্টা করছে।কিন্তু ওলটপালট করে দিচ্ছে তাকে রোজ,হ্যা রোজ নামের মেয়েটির চোখে অদ্ভুত মায়া!
আজ রোজ-দের বাড়িতে পিঠা বানানো হচ্ছে। এলাকার কিছু বিচ্ছু ছেলেমেয়ে আজ জড়ো হয়েছে রোজদের বাড়ি।পিকনিক, পিকনিক খেলা!চাঁদের আলোয় চাঁদের বুড়ি যেন নেই তিনি রোজ হয়ে রোজদের বাড়ির ফুলবাগানে ঘুরছে!
আপনিও আসুন, রবিনকে রোজ বললো।
মাঝ উঠোনে চোখ বেঁধে লুকোচুরি খেলা জমে উঠছে।রবিন যদি-ও খুব চিমটির শিকার হয়েছে তথাপি খুব এনজয় করেছে।শহরে এমন খেলা কেউ করে না তো!
মনোপলি খেলার হচ্ছে রাতের বেলা।রবিন এবং মনু স্যারের সাথে খেলার মাঝে রোজ এবং রোজের মা ফাতেমা বেগম যোগ দিলো।মা এবং মেয়ের বিড়াল চোখেমুখে হাসির ঝলক যেন লেগেই থাকে।অসম্ভব ভালো লেগেছে রবিনের এই পরিবারটি।
“এই ওয়ারি কিনবো,এই আমার হোটেল বসালাম,বাড়ি করলাম,ভাড়া দাও,ভাগ্য পরীক্ষা, জেলে যাও…”
এমন সব কথার মাঝে ধনী হবার মজার খেলা বা মনোপলি চলছিলো। মনু স্যারের কাছে হেরে গেলো রবিন। রোজের হাসি আর তার বাবার সাথে হাত মেলানো তাকে আরো আকর্ষণ করলো। ভালোবাসার অনুভূতি বুঝি এমন -রবিন মনে মনে ভাবলো।কে জানতো তার ভালোবাসার মানুষটি শহরে নয়,গ্রামে এমন অজো পাড়াগাঁয়ে থাকতো।তাই বুঝি কবি বলেছেন,” প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে ভুবনে,কোথায় কে ধরা পড়ে কে জানে?”
রোজের সবকিছু যেন রবিনের ভালো লাগে। মায়াবী মনোহারী রূপসী আরো অসংখ্য উপমা ঘুরে ফেরে রবিনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি জুড়ে। নিশ্চয়ই রোজও তাকে ভালোবাসে,নইলে এ-তোটা আপনভাবে তার সঙ্গে মিশতো কি! বিশ্বাসই-তো ভালোবাসার মূল ভিত্তি -এমন সব ভাবনারা উঁকি দিতে লাগলো রবিনের ঘুমহীন জোনাকজ্বলা রাতে।
কোটাকোল, লোহাগড়া, নড়াইল