Thursday, August 21
Shadow

প্রবল স্রোতে পাইকগাছার ১৬নং পোল্ডারের নির্মিত বাঁধে ধস 

পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : পাইকগাছায় গদাইপুর ইউনিয়নের ১৬নং পোল্ডারে হিতামপুর মৌজাস্থ ওয়াবদার বেঁড়িবাঁধের কপোতাক্ষ নদীর প্রবল স্রোতে আবারো ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। খরস্রোতে চলমান নির্মিত বাঁধ ধ্বসে গেছে। যেকোন সময় ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘটনাস্থল পরিদর্শন। উপজেলার হিতামপুর মৌজাস্থ চরেরবিল নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের ওয়াপদার বাঁধ বার বার ভেঙ্গে নদের গর্বে  বিলীন হচ্ছে। পরিবর্তন হচ্ছে এলাকার মানচিত্র। সম্প্রতি ভাঙ্গনে ১৭০ মিটার ওয়াপদা বাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলে  উক্ত বাঁধ নির্মাণে ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  কাজ চলমান অবস্থায় আবারও সেটা ধ্বসে পড়ছে। ভাঙ্গছে ওয়াপদার বাঁধ। মঙ্গলবার দুপুরের মেরামতাধীন বাঁধ ভেঙে যায়। আতংকিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক ভাবে অবহিত করা হয়। উপ বিভাগীয় সহকারী প্রৌকশলী এসএম রিফাত বিন রফিক (এসডিও) বুধবার সকালে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে স্থানীয় চরের বিলের জমির মালিক তৈয়েবুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে একবছর আগে প্রচন্ড ভাঙ্গনে চরের বিল সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে ১৬’শ বিঘা জমির  মাছ ও ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। পরবর্তীতে সরকারী ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে

বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করলে আশার সঞ্চার হলেও প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। সরজমিনে দেখা যায়,  বর্তমানে বর্ষার ভরা মৌসুম আবার নদীতে প্রবল স্রোত। চারটি স্থানে কমবেশি ৪শত মিটার ভাঙন কবলিত। কাজ করা কষ্টসাধ্য। তারপরও পাউবোর কর্মকর্তারা সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। স্থানীয় বাসিন্দার ও ঘেরমালিক মাকসুদুর রহমান মুকুল সহ অন্যান্যরা জানান, শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ সংস্কার না করায় আজকের এই পরিস্থিতি। নদীর প্রবল স্রোতে ওয়াবদার বাঁধ দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে। পাউবো’র থেকে যে জিওব্যাগ দিচ্ছে স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। আবার ভিতর অংশে লীজঘেরে পানি থাকায় কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। পাইকগাছায় যদি উভয়চর ভেকু মেশিন থাকতো তাহলে দ্রুত একটি রিং বাঁধ দিয়ে ভাঙন রক্ষা করা যেত।  সরকারের কাছে আমাদের দাবি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এ অঞ্চলে দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কারে উভয়চর ভেকু মেশিন দেয়ার। ঘের মালিক মিনারুল ইসলাম জানান আমার কয়েকটা চিংড়ী ঘের রয়েছে। এছাড়া ১৬ ‘শ বিঘা জমিতে বিভিন্নজন চিংড়ী চাষ করছেন।কিছুদিন পর ধান রোপন করা হবে। এমতাবস্থায় দ্রুততম সময়ে ওয়াপদার বাঁধ মজবুত করা না গেলে কৃষকরা ধান ও মাছ চাষে মারাত্মকভাবে বাঁধাগ্রস্থ হবে। ভাঙনে হলে ১৬ নং পোল্ডারের হিতামপুর, মেলেকপুরাইকাটি, চরমোনাই, গদাইপুর এলাকা প্লাবিত হয়ে কোটি কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ ক্ষতি হবে। মৎস্য সম্পদের পাশাপাশি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নার্সারি ব্যবসায়রা। গাছের চারা উৎপাদন, তৈরি, বিপণন শত শত বিঘার জমিতে নার্সারি ব্যবসা পরিচালনা করছে এ অঞ্চলের মানুষ। গাছের চারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। বছরের আড়াই শত কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়। শ্রম দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে কয়েক হাজার মানুষ। তারা দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কারে দাবি জানিয়েছেন। পাউবি’র উপ-বিভাগীয়  প্রকৌশলী এসএম রিফাত বিন রফিক বলেন, সরজমিনে দেখে গেলাম।  পানির চাপ  প্রচন্ড। এজন্য ভাঙন যেনতেন ভাবে রোধ করা যাবে না। নিতে হবে নতুন ব্যবস্থা। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *