
চীনে দিন দিন বহুমুখী হচ্ছে রোবটের ব্যবহার। শিল্প-কারখানার গণ্ডি পেরিয়ে বুদ্ধিমান রোবট এখন মানুষের ‘স্বাস্থ্য অভিভাবক’ হিসেবে নতুন ভূমিকা নিচ্ছে। বেইজিংয়ে চলমান ওয়ার্ল্ড রোবট কনফারেন্সে প্রদর্শিত উদ্ভাবনগুলো তুলে এনেছে এ সম্ভাবনা।
প্রদর্শনী হলে দেখা গেছে, চোখ বন্ধ করেও দর্শনার্থীরা ছয়-পাওয়ালা রোবট-কুকুরের সঙ্গে নিশ্চিন্তে হাঁটছেন। শাংহাই চিচি রোবটিকসের সিইও ফাং লিং জানান, এক মিটার লম্বা ও ২০ কেজি ওজনের এই রোবট দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। লাইডার প্রযুক্তি ও এআই সেন্সরের মাধ্যমে বাধা এড়িয়ে চলতে পারে এটি। ট্রাফিক সিগনালও চিনতে পারে এবং ব্যবহারকারীর হাঁটার গতি ও অবস্থার সাথে মানিয়ে চলতে পারে। বেইজিং ও শাংহাইয়ের বিমানবন্দরে ইতোমধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে এই রোবট।
চিকিৎসায় রোবটের ব্যবহারও বাড়ছে চীনে। এ বছরের মে মাসে ৬৬ বছর বয়সী এক রোগীর হাঁটুর জয়েন্ট প্রতিস্থাপন মাত্র ৩০ মিনিটে সম্পন্ন হয় আরওপিএ নামের স্মার্ট সার্জিক্যাল রোবটের সহায়তায়। এক্স-রে ও সিটি স্ক্যান থেকে থ্রিডি মডেল তৈরি করে ব্যক্তিগত সার্জারি পরিকল্পনা করে রোবটটি।
বেইজিং শিচিথান হাসপাতালের রোগীর সার্জন ছেন কুয়োছিয়াং বলেন, স্মার্ট রোবটের সাহায্যে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বারবার হাড় কাটার কাজ, অস্ত্রোপচারের সময় এবং রক্তক্ষরণ কমানো যায়। বর্তমানে, লংউড ভ্যালি মেডটেকের এআই-চালিত উদ্ভাবনী চিকিৎসা পণ্যগুলো চীনের ৩০টিরও বেশি প্রাদেশিক-স্তরের অঞ্চলে এক হাজারেরও বেশি শীর্ষ-স্তরের হাসপাতালে মোতায়েন করা হয়েছে, যা এক লাখেরও বেশি রোগীকে সেবা প্রদান করছে।
রোগীর পুনর্বাসনের কাজে শেনচেন তেইয়িমেড মেডটেক তৈরি করেছে ফিজিওথেরাপি রোবট, যা রিয়েল-টাইম বডি স্ক্যান, আকুপয়েন্ট শনাক্তকরণ ও ব্যক্তিগত থেরাপি পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে পারে। অন্যদিকে বেইজিং এআই-রোবোটিকসের এক্সোস্কেলিটন রোবট প্রতিবন্ধীদের হাঁটায় সাহায্য করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসা ও পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবায় রোবটের বড় বাজার তৈরি হচ্ছে। ২০২৪ সালে চীনের সার্জিক্যাল রোবট বাজারের আকার ছাড়িয়েছে ১০০০ কোটি ইউয়ান, যেখানে দেশীয় যন্ত্রপাতির অংশীদারিত্ব প্রায় ৪৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
সূত্র: সিএমজি বাংলা