Wednesday, February 5
Shadow

“ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়ের দুই সহজ উপায়: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও বাস্তব উদাহরণ”

ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে সচেতনতা: মাত্র দুটি সহজ পদ্ধতিতে ক্যান্সার জয় সম্ভব

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও বাস্তব উদাহরণের আলোকে

একসময় ক্যান্সারকে নিশ্চিত মরণব্যাধি হিসেবে ধরা হলেও আজকের আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগকে প্রতিরোধ ও নিরাময় করা সম্ভব। রাশিয়ার ওশ স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি (বি ভি) তার গবেষণার আলোকে জানিয়েছেন, মাত্র দুটি সহজ অভ্যাস অনুসরণ করলেই ক্যান্সার কোষ বিনাশ করা সম্ভব।

বিশ্বজুড়ে লক্ষাধিক মানুষ আজ এই রোগে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি মানুষের অসচেতনতার কারণেই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত রুটিন, এবং সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডির দুটি প্রধান পদ্ধতি

১. চিনি খাওয়া বন্ধ করুন:

ক্যান্সার কোষ শরীরে বেঁচে থাকার জন্য মূলত চিনি বা গ্লুকোজের ওপর নির্ভর করে। চিনি খাওয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করলে ক্যান্সার কোষ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং প্রাকৃতিকভাবেই ধ্বংস হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি শরীরের অন্যান্য ক্ষতিকারক রোগ যেমন ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের জন্যও দায়ী। তাই সুগার-মুক্ত খাদ্যাভ্যাস ক্যান্সারের বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

২. লেবু মিশ্রিত গরম পানি পান করুন:

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানিতে একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এই অভ্যাস শরীরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে বিষমুক্ত করতে সহায়তা করে। ডা. রেড্ডি দাবি করেন, টানা তিন মাস এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হয়ে যায়।

এছাড়া অর্গানিক নারিকেল তেল প্রতিদিন সকালে ও রাতে তিন চা-চামচ করে খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।

বিশ্বের বিভিন্ন বাস্তব উদাহরণ

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি থমাসের কাহিনি:

মেরি থমাস স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে প্রতিদিন সকালে লেবু মিশ্রিত গরম পানি পান শুরু করেন। ছয় মাস পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে ক্যান্সারের কোনো অগ্রগতি নেই। মেরি বলেন, “চিনি ছাড়ার পর আমার শরীরে আশ্চর্য পরিবর্তন হয়েছে। আমি আরও শক্তিশালী অনুভব করছি।”

২. ভারতের কৃষক শ্যামলাল যাদবের অভিজ্ঞতা:

শ্যামলাল, একজন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তি, ডা. রেড্ডির পরামর্শ অনুযায়ী চিনি বাদ দিয়ে নিয়মিত লেবু মিশ্রিত গরম পানি এবং নারিকেল তেল গ্রহণ করেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। এখন তিনি তার অভিজ্ঞতা প্রচার করে অন্যদেরও সাহায্য করছেন।

ক্যান্সারের মূল কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সারের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

• অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।

• ধূমপান ও মদ্যপান।

• মানসিক চাপ।

• প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ।

• অলস জীবনযাপন।

ক্যান্সার প্রতিরোধে যা করতে হবে:

• তাজা ফল ও শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

• প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।

• ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলুন।

• পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চলুন।

• শরীরের যেকোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বিশেষজ্ঞদের বার্তা

ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আপনার দায়িত্ব হলো এই সহজ তথ্যটি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমেই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।”

মেরিল্যান্ড কলেজ অব মেডিসিনের গবেষণায়ও বলা হয়েছে, ক্যান্সার নিরাময়ে এই পদ্ধতিগুলো কেমোথেরাপির চেয়ে হাজার গুণ বেশি কার্যকর।

শেষ কথা:

ক্যান্সার এখন আর মরণব্যাধি নয়। সময়মতো সচেতনতা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জীবন বাঁচাতে পারে। আসুন, নিজের এবং পরিবারের সুস্থতার জন্য সচেতন হই এবং অন্যদের সচেতন হতে সাহায্য করি।

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *