Thursday, August 21
Shadow

অনেক রোগ সারাবে কালমেঘ ভেষজ

একেএম নাজমুল আলম, কুষ্টিয়া: প্রকৃতির ভাণ্ডারে অসংখ্য ভেষজ গাছ রয়েছে, যেগুলো মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তেমনই একটি গাছ হলো কালমেঘ (বৈজ্ঞানিক নাম: Andrographis paniculata)। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে অনেকেই এই গাছ চেনেন, তবে এর বহুমুখী ঔষধি গুণ সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই।

কালমেঘ একটি তিক্ত স্বাদের ভেষজ গাছ, যা সাধারণত বর্ষাকালে বেশি জন্মায়। গাছের উচ্চতা ৩০ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। পাতাগুলো সবুজ, লম্বাটে এবং গাছের কাণ্ড নরম। শীতে এর ফুল ও ফল হয়।

অজানা তথ্য

  •  কালমেঘকে বাংলায় “সব রোগের মহৌষধ” বলা হয়।
  •  এ গাছের পাতার রস এতটাই তিক্ত যে, অনেক পোকামাকড়ও এটি খেতে সাহস পায় না।
  • প্রাচীন আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও চীনা চিকিৎসায় কালমেঘ বহু রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
  •  এটি প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করতে পারে, তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই।

ঔষধি গুণ

  • জ্বর ও সর্দি-কাশি: পাতার রস বা শুকনো গুঁড়া শরীরের তাপমাত্রা কমায় এবং ভাইরাসজনিত জ্বর সারাতে সাহায্য করে।
  • যকৃতের সুরক্ষা: কালমেঘ লিভারের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং হেপাটাইটিসসহ বিভিন্ন যকৃতের রোগে উপকারী।
  • হজমশক্তি বৃদ্ধি: গাছের নির্যাস ক্ষুধা বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে এবং পেটের পীড়া দূর করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: নিয়মিত সেবনে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ফলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কম হয়।
  • চর্মরোগ নিরাময়: পাতার রস ক্ষত, ফোড়া বা চর্মরোগে লাগালে দ্রুত আরোগ্য হয়।

কালমেঘের ব্যবহারবিধি

  • পাতার রস সামান্য পানি মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • শুকনো পাতা গুঁড়া করে গরম পানিতে মিশিয়ে সেবন করা যায়।
  • কালমেঘের নির্যাস বাজারে ক্যাপসুল বা সিরাপ আকারেও পাওয়া যায়।

সতর্কতা 

  • কালমেঘের স্বাদ অতিমাত্রায় তিক্ত, তাই শিশু বা গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। অতিরিক্ত সেবনে ডায়রিয়া বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে।
  • প্রকৃতির এই অমূল্য ভেষজ গাছটি সংরক্ষণ ও চাষে মনোযোগ দিলে আমরা অনেক প্রয়োজনীয় ওষুধের বিকল্প ঘরে বসেই পেতে পারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *