Tuesday, September 30
Shadow

আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারে লজ্জায় ডুবল বাংলাদেশের


টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ৭ উইকেটের পরাজয়ে লজ্জাজনকভাবে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শেষ ওভারে জয় তুলে নেয় আরব আমিরাত, সিরিজ জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে।

এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল আরব আমিরাত। শুধু তাই নয়, টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে এটিই আমিরাতের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়—যা তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক অর্জন।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ৫৭ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। ওপেনার পারভেজ ইমন প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন। লিটন দাস ১০ বলে ১৪ রান করেই ফিরেন সাজঘরে। তাওহীদ হৃদয় ও শেখ মেহেদী হাসান দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই আউট হলে আরও ধস নামে।

তামিম ইকবাল কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন। ১৮ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংসে চারটি চার ও চারটি ছক্কা মারেন তিনি, কিন্তু তার ইনিংসও থেমে যায় ভুল শট খেলতে গিয়ে।

পরের দিকে শামীম পাটোয়ারী ও রিশাদ হোসেনও ব্যর্থ। ১২ বলে ৯ রান করেন শামীম, রিশাদ ফেরেন শূন্য রানে। এরপর তানজিম সাকিবও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি।

তবে শেষ দিকে জাকের আলী ও হাসান মাহমুদের ব্যাটিং বাংলাদেশের জন্য কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়। জাকের ৩৪ বলে ৪১ রান করেন, যার মধ্যে ছিল তিনটি ছক্কা ও একটি চার। হাসান মাহমুদ ১৫ বলে তিনটি ছক্কা মেরে ২৬ রান যোগ করেন। শরিফুল ইসলামও ৭ বলে ১৭ রানে কার্যকরী ভূমিকা রাখেন। শেষ তিন ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৫৩ রান, যার মধ্যে শেষ ওভারেই আসে ২৬ রান।

ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৭ রান।

লক্ষ্য সহজ না হলেও দারুণ ব্যাটিংয়ে তা অনায়াসে টপকে যায় আমিরাত। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ কিছুটা ম্যাচে ফিরে এলেও, মূল ক্ষতি করে দেয় আলিশান শারাফু ও আসিফ খানের জুটি।

৪৭ বলে ৬৮ রান করেন আলিশান, মারেন ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। তার সঙ্গে আসিফ খান ২৬ বলে ৪১ রান যোগ করেন, যাতে ছিল ৫টি ছক্কার ঝড়। শেষ পর্যন্ত ১৯.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণও ছিল হতাশাজনক। বিশেষ করে স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে কোনও ব্রেকথ্রু দিতে পারেননি। তানজিম সাকিব ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন, ব্যাট হাতেও ছিলেন নিষ্প্রভ।

শরিফুল ইসলাম কিছুটা ভালো বল করেছেন—৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে একটি উইকেট শিকার করেন।

এই সিরিজটি মূলত পাকিস্তানে যাওয়ার আগে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজন করেছিল বিসিবি। এমনকি বিসিবির অনুরোধেই তৃতীয় ম্যাচটি যুক্ত করা হয় সিরিজে। অথচ সেই ম্যাচেই সিরিজ খুইয়ে হতাশার চূড়ায় উঠল বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন এক হারের ধাক্কা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *