Site icon আজকের কাগজ

কন্যার বিয়ের কর

নুর হোসেন ভূঁইয়া

ঘাম ঝরিয়ে গড়লো এ ঘর,

স্বপ্ন গড়ল একা,

মেয়ের হাসি দেখার আশায়,

বুক চেপে সহে ব্যথা।

বড় করে তুলল যারে,

প্রাণের চেয়ে প্রিয়,

দিলো নিকাহ সাদরে,

হিসাব নিলো কে কভু?

ইফতারি দিলো জামাই ঘরে,

কুড়ি হাজার খরচ,

টাকা কি আর গাছে ধরে;

ধার দিয়েছে ছওড়া দরে,

রক্ত ছুষে নিবে পরে।

তবুও শুনতে হলো কথা

“কম হয়েছে একটু নুন!”

ঈদ এলে চায় না তো কিছুই,

না দিলে কেবল বায়না বড়ায়,

ফল দিতে হবে, গরু পাঠাও,

নগদ টাকাকড়ি,আরও কত কি!

কষ্টের হিসাব নাই।

গ্রীষ্ম এলো;

ফল না পাঠালে মনটা কালো;

সাথে আরও কত কি!

শীত এলেই পিঠা দিতে,

আবার নতুন জ্বালা।

শীত ফেরিয়ে বসন্ততে,

কত কিছুর পালা।

ও! নিকার সময়তো বাদই গেলো,

তখন যে আরও কত কি!

সংসার পৃথক হতে যত খরছ,

তার ছাইতে কম কি!

এদিকে ছেলে পরিক্ষা দেবে,

ফর্ম ফিলাপে লাগে,

কোথায় পাবে বাবা টাকা?

কেউ কি খোঁজ রাখে?

বুক চেপে বাবার দীর্ঘশ্বাস,

টাকার যন্ত্রণার ঘূর্ণিপাক,

শরীরটা আস্তে আস্তে নিঃশেষ,

অসুখ আরও বাড়েছে ভারী।

কিসের সুখ দিনমজুর বাবার,

আজন্ম তার পাপ,

মাসান্তরে থাকতে হয় তার,

কিস্তিওয়ালার রোষানল।

একদিন সকালে লাশ হয়ে পড়ে,

কান্নায় ভেসে যায় ঘর,

মেয়ের সুখের তরে,

একজন বাবা সব দিলো শেষ করে!

কবে ভাঙবে এই শিকল?

কবে থামবে লোভের নাচন?

কবে বুঝবে সমাজের মানুষ,

বাবার ভালোবাসার কোন দাম নাই?

দাম আছে শুধু নগদ কড়ির ?

জেগে ওঠো, ভাঙো প্রথা,

না হলে হারাবে কত শত বাবা!

Exit mobile version