দিন দিন বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ইউরোপে কাজের আগ্রহ বাড়ছে। তবে অনেকেই হয় দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন, নয়তো সঠিক প্রক্রিয়া জানার অভাবে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ এখন অনলাইনে ঘরে বসেই নিজে নিজে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করা সম্ভব।
বর্তমানে ইউরোপের যেসব দেশে বিদেশি কর্মীর চাহিদা বেশি, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, লিথুয়ানিয়া ও হাঙ্গেরি। এসব দেশে মূলত আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, হসপিটালিটি, কৃষিকাজ, কনস্ট্রাকশন, কারখানা এবং গৃহপরিচালনা কাজে শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
চাকরির জন্য প্রথম ধাপ হল একটি নির্ভরযোগ্য পোর্টাল খুঁজে তাতে নিবন্ধন করা। ইউরোপের যে সকল সরকারি বা আন্তর্জাতিক পোর্টাল রয়েছে চাকরির খুঁজে আবেদন করতে হবে। সেরা কিছু ওয়েবসাইট হলো দেয়া হল:
- EURES – The European Job Portal
- Make It In Germany (Germany Work Portal)
- LinkedIn Jobs
- Work in Finland
- JobServe EU
কোনো ইউরোপিয়ান প্রতিষ্ঠান থেকে যদি নিয়োগপত্র (Job Offer Letter) পাওয়া যায়, তাহলে সেই চুক্তিপত্র অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে কাজের ভিসার আবেদন করা যাবে। প্রতিটি দেশের জন্য আবেদন পদ্ধতি আলাদা, তবে ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে—
- বৈধ পাসপোর্ট
- নিয়োগপত্র বা কাজের চুক্তি
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- ইংরেজি ভাষার দক্ষতার সনদ (কিছু ক্ষেত্রে)
- শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রমাণ
সরাসরি ভিসা আবেদন করা যাবে যেসব ওয়েবসাইটে:
- জার্মানির জন্য: https://videx.diplo.de
- ফিনল্যান্ডের জন্য: https://enterfinland.fi
- পোল্যান্ডের জন্য: https://www.e-konsulat.gov.pl
- নেদারল্যান্ডসের জন্য: https://ind.nl
সাধারণত ভিসা প্রক্রিয়া শেষ হতে ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। প্রক্রিয়াটি নির্ভর করে নিয়োগকর্তার প্রক্রিয়া, সরকারি অনুমোদন এবং দূতাবাসের সময়সূচির ওপর।
বিদেশে কাজ করতে আগ্রহীরা অনেক সময় দালালের মাধ্যমে আবেদনের চেষ্টা করেন, যা ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রতারণাপূর্ণ হতে পারে। এক্ষেত্রে পরামর্শ হচ্ছে—নিজের তথ্য নিজে তৈরি করে সরকারি ওয়েবসাইট থেকেই আবেদন করা। এতে যেমন খরচ কমবে, তেমনি প্রতারণার আশঙ্কাও থাকবে না।
বিশেষ ভাবে সকলের প্রতি আবেদন থাকবে: ১) দক্ষতা থাকলে চাকরির সুযোগ অনেক। ২) নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে আবেদন করুন। ৩) কাজের অফার না পেলে ভিসা হবে না ৪) যে কোনো ফি দিলে তা প্রমাণস্বরূপ রেখে দিন। (৫) ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে ভিসা বাতিল হতে পারে
ইউরোপে বৈধভাবে কাজ করতে হলে ধৈর্য ও সততা জরুরি। সরকারের অনুমোদিত পোর্টাল, দূতাবাস ও ভিসা সেন্টারগুলোর তথ্য যাচাই করেই ভিসা আবেদন করলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।