
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা: পাইকগাছায় ড়িদ সপ্তাহ থেকে লাগাতার বৃষ্টি চলেছে। কখনো ভারী আবার কখনো মাঝারি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে প্রায় বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে যাননি তেমন একটা।
পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দার সহকারী অধ্যাপক আবু ছাবাহ জানান, রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টা থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ভারী বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমে এলেও সোমবার সারা দিনই বিরামহীনভাবে বৃষ্টি হচ্ছে।
এতে জলাবদ্ধতায় পৌরসভা জুড়ে দুর্ভোগ নেমে আসে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজমান থাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।
পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়ক সহ দুই চারটা রাস্তা ছাড়া সকল রাস্তা ও নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বর্ষণের ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল খুবই কম।
জরুরি পণ্যের দোকান বাদে অন্যান্য অধিকাংশ দোকানপাট ছিল বন্ধ। এরকম চিত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকার একাধিক স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে। বৃষ্টি হলেই তাদের এ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়। যে ড্রেন তাও পরিষ্কার না থাকায় জলাবদ্ধতা এখানকার নিত্যদিনের সঙ্গী। পৌরসভার আশপাশের খালগুলো খনন না করা হলে এই জলাবদ্ধতা থেকে তাদের নিস্তার নেই বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হোসেন বলেন, আজকে পর্যন্ত বীজতলা ৬৫ হেক্টর, সবজি ১৮০ হেক্টর, মরিচ ২০ হে. অফ সিজিন তরমুজ ১২ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান, অতি বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় এপর্যন্ত ৯৮০টি পুকুর, ৫৫৮৫ টি মৎস্য ঘের যাহার মোট আয়তন ২৭৬৮ হেক্টর। মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭কোটি ৪০ লাখ টাকা। পানি না কমলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, সাগরে ফের লঘুচাপের কারণে গত কাল থেকে মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টি। টানা বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জনজীবন বিপর্যস্ত হবে। সাময়িক সংকট উত্তরণে ইউনিয়ন ও পৌর জনপ্রতিনিধি সহ সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের, স্বেচ্ছাসেবীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।