Sunday, July 20
Shadow

চীনের ইনার মঙ্গোলিয়ায় মরুভূমির সবুজ বেষ্টনি সম্পন্ন

উত্তর চীনের ইনার মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের তিনটি প্রধান মরুভূমিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বালির বেষ্টনী। বাদাইন জারান, উলান বুহ এবং তেঙ্গের মরুভূমিকে ঘিরে ১৮৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সবুজ বেল্ট এখন সুরক্ষা দেয়াল হিসেবে কাজ করছে। খড় দিয়ে তৈরি চেকারবোর্ডের মতো দেখতে বেষ্টনীগুলো নিয়ন্ত্রণে এনেছে মরুর বেড়ে চলা। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক নানা যন্ত্রের ব্যবহার। চীনে মরুভূমিভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজম ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথও দেখাচ্ছে এই সাফল্য।

দাইন জারান মরুভূমির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে খড়ের ‘চেকারবোর্ড’ বসানোর মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহে শেষ হয় এখানকার শেষ ধাপের কাজ। এর ফলে এখন ১,৮৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সবুজ বেষ্টনী বাদাইন জারান, উলান বুহ এবং তেংগের—এই তিন মরুভূমিকে ঘিরে ফেলেছে, যা ভবিষ্যতে মরুর বিস্তার রোধ করবে।

বালুর গতিপথ আটকাতে একটি প্রাচীন কৌশল চেকারবোর্ড। মরুভূমির বালুর ওপর খড় বিছিয়ে ছক আকারে সাজানো হয়, যাতে বাতাসে বালু উড়ে না যায় এবং ধীরে ধীরে ওই জায়গাটি গাছ লাগানোর উপযুক্ত হয়ে ওঠে। একে বলা হয় ‘ডেজার্ট এজ-লকিং, যার মাধ্যমে মরুভূমির প্রান্তে উদ্ভিদ বেষ্টনী গড়ে তুলে বালুর অগ্রযাত্রা ঠেকানো হয়।

আলসা লিগের আয়তন প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার, যার প্রায় ৭৪ শতাংশ ভূমি মরুকৃত। এই তিন মরুভূমি একত্রে ৯৪ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত—যা আলসা অঞ্চলের এক-তৃতীয়াংশ এবং পুরো ইনার মঙ্গোলিয়ার মরুভূমির ৮০ শতাংশের বেশি।

গত বছরের শেষ নাগাদ এই অঞ্চলে ১,৪২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বালু প্রতিরোধক বেষ্টনী তৈরি হয়েছিল। চলতি বছরে হাতে নেওয়া হয় বাকি ৪৩১ কিলোমিটার বন্ধের কাজ—যা করা হয়েছে হাতে ও যান্ত্রিক পদ্ধতির সংমিশ্রণে।

বালু নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এখানে নতুন শক্তি উন্নয়ন প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে বীজ ছিটানো, বিভিন্ন ভূমির ধরন অনুযায়ী গাছ লাগানো এবং ঘের দিয়ে পরিবেশ পুনরুদ্ধার—সবকিছু মিলিয়ে গাছ টিকে থাকার হার বাড়ানো হচ্ছে।

বর্তমানে আলসার ৫০ শতাংশের বেশি বালু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চলছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। এর মধ্যে ৮টি সৌরশক্তিচালিত বালু প্রতিরোধ প্রকল্পও শেষ হয়েছে।

আলসা কর্তৃপক্ষ বলছে, মরুভূমিভিত্তিক শিল্প যেমন পরিবেশবান্ধব পর্যটন ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাত গড়ে তোলার মাধ্যমে পরিবেশ ও অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *