Sunday, July 20
Shadow

শ্রীবরদীতে জাল সনদে শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড, কোষাগারে অর্থ ফেরতের নির্দেশ 

রিয়াদ আহাম্মেদ, শেরপুর : শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ইন্দিলপুর আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে জাল সনদে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিরিক্ষায় তা প্রমাণিত হয়েছে। এ ব্যাপারে অধিদপ্তর থেকে জালিয়াতি করে উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার চিঠি দেয়া হয়। তবে প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও ফেরত দেয়নি একটি টাকাও। উল্টা সাংবাদিকদের আংশিক টাকা জমা দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দেন। এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন তিনি টাকা ফেরতের কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, শিক্ষক মো. আবুল হাসেম বিদ্যালয়ের গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করাতেন। তিনি ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে বিএড সনদের মাধ্যমে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির মাধ্যমে উচ্চতর বেতন স্কেল পান। তবে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির ১০ বছর পর জানা যায় সেই বিএড সনদটি ছিল জাল। পরবর্তীতে সরকার টাকা ফেরতের নির্দেশ দেন। 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চলতি বছরের ২৩ মার্চ অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেন। অধিদপ্তরের মাধ্যমিক-১ শাখার কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়, শ্রীবরদী উপজেলার ইন্দিলপুর আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান) মো. আবুল হাসেম বিএড জাল সনদের মাধ্যমে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন। যার দরুন ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মোট ৯বছর ১০মাসের বেতন সরকারি কোষাগারে চালানের মাধ্যমে ফেরত দিতে বলা হয়। 

এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, স্কুলের শিক্ষকই যদি জালিয়াতি করেন তাহলে তার কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে? এমন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। শুধু বাড়তি টাকা ফেরত নেয়া; এমন গুরুতর অপরাধের শাস্তি হতে পারে না। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম দূর না হলে এমন ঘটনা কমবে না বলেও জানান স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে শিক্ষক মো. আবুল হাসেমের কাছে অর্থ ফেরত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, ‘লাখ খানেক টাকা ফেরত দিয়েছি। আর বাকি গুলো দিয়ে দিব। তবে হিসাব শেষ করে টাকা ফেরতের কথাও জানান তিনি’।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঈনুল হক বলেন, “কত টাকা ফেরত দিতে হবে তার হিসাব-নিকাশ চলছে। একজন অভিজ্ঞ লোক দিয়ে হিসাব করানো হচ্ছে। হিসাবের কাজ শেষ হলেই খুব তাড়াতাড়ি টাকাটা ফেরত দেয়া হবে।”

অর্থ ফেরত প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আলম তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষক আবুল হাসেম অর্থ ফেরত দেয়ার কোন ডকুমেন্ট আমাকে দেখাতে পারেন নাই। আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথেও এই বিষয়ে কথা বলেছি। সাতদিনের মধ্যে হিসাবের কাজ শেষ করে মোট টাকার পরিমাণটা কত হয় তা জানাতে বলেছি। এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা মানতে তাকে অবশ্যই মনোযোগী হতে হবে বলেও জানান তিনি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *