চীন এবার শস্য সংরক্ষণে নানা প্রদেশে কাজে লাগাচ্ছে স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। যার ফল হিসেবে এরই মধ্যে চীনজুড়ে গমসহ গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৫ কোটি টনেরও বেশি। আধুনিক ওয়্যারহাউসে কৃষকরা স্মার্ট কার্ড দিয়ে করছেন নিবন্ধন ও মান যাচাই। ওজন নির্ধারণ ও মূল্য পরিশোধও হয়ে যাচ্ছে চোখের পলকে। গবেষণা বলছে, এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে ২ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্যশস্যকে অপচয়ের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।
গ্রীষ্মের ধান-গম সংগ্রহের মৌসুমে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে চলছে পুরোদমে শস্য সংগ্রহ, শুকানো ও সংরক্ষণের কাজ। হুবেই, চিয়াংসু ও আনহুই প্রদেশে সরকার-নিয়ন্ত্রিত সংস্থা চায়না সাপ্লাই অ্যান্ড মার্কেটিং গ্রেইন অ্যান্ড অয়েল কোম্পানি চালু করেছে ১৩টি সংরক্ষণাগার ও ১২টি লজিস্টিক হাব।
চিয়াংসু প্রদেশের কাওছুন জেলায় একটি ওয়্যারহাউসে ঢুকলেই চোখে পড়বে অত্যাধুনিক সব স্মার্ট যন্ত্রপাতি।
কাওছুন ডিসট্রিক্ট গ্রেইন পারচেসিং অ্যান্ড মার্কেটিং গ্রুপের গুদাম ব্যবস্থাপক মাও বেই জানালেন, ‘শুধু একটি স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেই কৃষক রেজিস্ট্রেশন, মান যাচাই, ওজন ও মূল্য পরিশোধ—সব করতে পারছেন এক জায়গায়। এতে দ্রুত অর্থ পাচ্ছেন কৃষকরা, এবং আরও উৎসাহ পাচ্ছেন ভালো মানের শস্য দিতে।’
অন্যদিকে, কুয়াংতোংয়ের তোংকুয়ানে একটি শস্য গুদামে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা যায়। শস্য সংরক্ষণে উদ্ভাবনী সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে এই সংরক্ষাণাগার। কমাচ্ছে শস্যের অপচয়।
চীনের জাতীয় খাদ্য ও কৌশলগত রিজার্ভ প্রশাসন একাডেমির শস্য সংরক্ষণ ও পরিবহন গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক চাং চোংচিয়ে জানালেন, ‘চীন এখন শস্য সংরক্ষণে সবুজ প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। একাধিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমরা শস্য সংরক্ষণের অপচয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারছি। এটি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য বলছে, বিশ্বজুড়ে কৃষিজ উৎপাদনের প্রায় ১৪ শতাংশ নষ্ট হয় খামার থেকে খুচরা বিক্রেতার কাছে যাওয়ার পথেই। চীনের সবুজ সংরক্ষণ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই অপচয় মাত্র ১ শতাংশ কমাতে পারলেই মিলবে ২ কোটি ৭০ লাখ টন অতিরিক্ত খাদ্য—যা বছরে ৭ কোটি মানুষের প্রয়োজন মেটাতে পারে।
স্মার্ট প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির মেলবন্ধনে চীনের এই উদ্যোগ তাই হতে পারে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনুকরণীয় মডেল।
সূত্র: সিএমজি বাংলা