ডা: মোঃ হুমায়ুন কবীর কনসালটেন্ট, রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার, ২৫/৩, নবাব কাটারা, নিমতলী, চানখাঁরপুল, ঢাকা-১০০০ : ভেরিকোসিল হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে পুরুষের অন্ডকোষ হতে ওপরের দিকে বিস্তৃত শিরাগুলির অস্বাভাবিক ফুলে যাওয়া এবং পেঁচানো অবস্থায় সৃষ্টি হওয়া। শতকরা ১৫ ভাগ পুরুষের মধ্যে ভেরিকোসিল রোগটি দেখা দেয় যা পায়ের শিরার ভেরিকোসের মতো। শৈশব- কিশোরদের মধ্যে রোগটিতে বেশী আক্রান্ত হয়। পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সবচেয়ে সাধারণভাবে শনাক্তযোগ্য কারণ হলো ভেরিকোসিল। বাম দিকে রোগটি বেশি হলেও ডান দিকে বা উভয় দিকেও হতে পারে।
লক্ষণ
অস্বস্তিভাব, অন্ডকোষে অল্প ব্যথা হতে পারে
অন্ডকোষের শিরাবৃদ্ধি এবং মচকে যাওয়া
অন্ডকোষ ফুলে যাওয়া, ভারী হওয়ার অনুভূতি
ব্যথাবিহীন টেষ্টিকুলার লাম্প
শুক্রানুর সংখ্যা কমে যাওয়া
বন্ধ্যাত্বের মতো উপসর্গ তৈরী হওয়া
অন্ডকোষে নিস্তেজ, বারবার ব্যথা
অন্ডকোষে দৃশ্যমানভাবে প্যাঁচানো শিরা
দাঁড়ালে ব্যথা বেড়ে যায়
কারণ
প্রতিটি অন্ডকোষ একটি শুক্রানুযুক্ত কর্ড দ্বারা সংযুক্ত থাকে, যাতে এই গ্রন্থিগুলিকে সংযোগকারী শিরা, ধমনী ও থাকে। অন্ডকোষের অভ্যন্তরে শিরাগুলিতে রক্ত একমুখী ভালভ দ্বারা এক অন্ডকোষ হতে অপর অন্ডকোষে স্থানান্তরিত হয়। কখনো কখনো শিরাগুলিতে রক্ত চলাচল ব্যহত হয় তখন শিরায় পুল হতে শুরু হয়, যা এটিকে স্ফীত করে তোলে। ভেরিকোসিল সাধারণত সময়ের সাথে সাথে ধীরে
ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। হস্তমৈথুন, কোষ্টকাঠিন্য ও পেটের নানাবিধ টিউমার ও অন্যতম কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
রোগ নির্ণয়
রোগীকে দাঁড়িয়ে ও শোয়া অস্থায় শারীরিক পরীক্ষা করে রোগটি নির্ণয় করা যায়
আল্ট্রাসনোগ্রাম জটিলতা
ভেরিকোসিল পুরুষের উর্বরতার উপর প্রভাব ফেলে। প্রায় ৪৫ শতাংশ পুরুষের প্রাথমিক বন্ধ্যাত্বের এবং ৮০ শতাংশ পুরুষের মাধ্যমিক বন্ধ্যাত্বের কারণ ভেরিকোসিল।
চিকিৎসা
প্রাথমিক ভাবে রোগের লক্ষণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।কখনো কখনো রোগের জটিলতায় ভেরিকোসিলেকটমি ও ভেরিকোসিল এমবিলাইজেশন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। অস্বস্তিভাব দুর করতে আরামদায়ক অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাও করা যেতে পারে। কারণ হোমিওপ্যাথিক লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি।
প্রতিকার
ব্যথা কমাতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে
জকস্ট্র্যাপ ব্যবহার করতে হবে
নিয়মিত ব্যয়াম করতে হবে
কঠোর পরিশ্রম ও ভারী কাজ হতে দুরে থাকতে হবে
কোষ্টকাঠিন্য দুর করতে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করতে হবে
প্রক্রিয়াজাত, লবণাক্ত, তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
চিনি ও পরিশোধিত শস্য এড়িয়ে চলতে হবে
ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও ধুমপানকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে হবে।